১৬ই জুন, ২০২৫ 🔻 ২রা আষাঢ়, ১৪৩২🔻 ১৯শে জিলহজ, ১৪৪৬

আটঘরিয়ায় প্রচারনায় ব্যস্ত প্রার্থীরা

শেয়ার করুন:

মাসুদ রানা, আটঘরিয়া ঃ আটঘরিয়া পৌরসভা নির্বাচনের দিন যতই যাচ্ছে ততই ভোটারদের মত পাল্টে যাচ্ছে। মেয়রসহ কাউন্সিলর প্রার্থীরা আরামের ঘুম হারাম করে কনকনে শীতের কুয়াশাকে উপেক্ষা করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। স্ত্রী প্রার্থীদের সাথে মাঠে নেমেছেন স্বামী সন্তানরাও। তেমনি স্বামী-সন্তান প্রার্থীদের সাথেও স্ত্রী সন্তানরা বসে নেই। সবার আশা ভোট যুদ্ধে জিততেই হবে।

তবে সাধারণ ভোটাররা ভোট দেয়ার ব্যাপারে কোন প্রার্থীকেই নিরাশ করছেন না। প্রার্থীরা ব্যবসায়ী ভোটারদের দোকানে গিয়েও ভোট প্রার্থনা করছেন। শুধু তাই নয় মাঠে কর্মরত শ্রমিকদের কাছে ও যাচ্ছেন ভোটের আশায়। দিচ্ছেন নানা ধরণের প্রতিশ্রæতি। তবে পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে বিভিন্ন বাজারের অলি-গলি, বাসা-বাড়ি, চায়ের দোকান, গাছপালা ও বিভিন্ন স্থাপনায়।

সরজমিনে দেখা গেছে, মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা দল বেঁধে প্রচার প্রচারনায় নির্বাচনী এলাকা সরগরম করে তুলছেন। খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে কোমর বেঁধে নির্বাচনী মাঠে দিন-রাত সময় দিচ্ছেন। তারা ভোটারদের কাছে গিয়ে তাদের আদর্শের বয়ানসহ পৌরসভার উন্নয়নের প্রতিশ্রæতি ব্যক্ত করছেন। তবে এবার দলীয় ভাবে দি¦তীয় বার নির্বাচন হওয়ায় ভোটাররা মুখ খুলছেন না। মুখ খুলছেন পরিচিত দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা। তারা অটোরিক্সা, ইজিবাইক ও রিক্সায় মাইক বেঁধে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।

এবার আটঘরিয়া পৌরসভায় ৩জন মেয়র প্রার্থী ভোট যুদ্ধে লড়াই করেছেন দিনরাত। মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা। জিততেই হবে? তবে সাধারন ভোটাররা বলছেন কে হবেন আটঘরিয়া পৌরসভার মেয়র, শহিদুল ইসলাম রতন, আশরাফুজ্জামান জুয়েল নাকি আলহাজ ইশারত আলী। চুল ছেড়া বিশ্লেষণ করছেন মেয়র প্রার্থীরা।

মেয়র প্রার্থীরা হলেন আওয়ামীলীগ মনোনীত বর্তমান মেয়র শহিদুল ইসলাম রতন (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আশরাফুজ্জামান জুয়েল (নারিকেল গাছ), স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ মোঃ ইশারত আলী (জগ)। কোমর বেধে মাঠে নেমেছেন ভোট যুদ্ধে। প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী প্রচারনায় ব্যস্ত সময় সব প্রার্থীর।

এদিকে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ৮জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২১জন প্রার্থীও মাঠে-ঘাটে কোমর বেঁধে অবিরাম প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনী সময় ঘনিয়ে আসার সাথে পৌর শহরে অলি-গলি, চায়ের দোকান, হোটেল, রেস্তোরা, বিভিন্ন স্থাপনা ও বসত বাড়ির সামনে পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে। প্রার্থীরা সবাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী প্রকাশ করেছেন।

এবিষয়ে আ’লীগের মনোনীত প্রার্থী শহিদুল ইসলাম রতন বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন। আমি বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হবো।

স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুজ্জামান জুয়েল জানান, জনগণের ইচ্ছাতেই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। এনির্বাচনে যেহেতু আ’লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত প্রার্থী হয়েছি তাই তাদের ভোট ভাগাভাগি হয়ে যাবে। এ সুযোগে আমার জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। আলহাজ মো: ইশারত আলী জানান, বৃহত্তম দল আ’লীগ প্রার্থীর প্রচারণায় পৌর সভা সরগরম হয়ে উঠেছে। হিসাব-নিকাশ চলছে ভোটারের। জয়ের ব্যাপারে আমি অনেকটাই আশাবাদী।

৮ নং ওয়ার্ডের ভোটার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রার্থীরা সবাই ভাল লোক। কাকে ভোট দেব তা এখনো মনস্থির করতে পারিনি। ৭নং ওয়ার্ডের ভোটার  ছবি বেগম জানান, বাবারে প্রার্থীদের আনা-গোনায় রাতে ঠিক ভাবে ঘুমাতে পারি না। যে পৌরসভার উন্নয়ন করবে তাকেই বেঁচে নিবো।

৬নং ওয়ার্ডের ভোটার এটিএম মকসেদুর রহমান জানান, ভোট আসলে প্রার্থীদের আনা-গোনার কমতি থাকে না। ভোট শেষ হলেই তাদের দেখা পাওয়া যায় না। তিনি আরো বলেন, প্রতিশ্রæতি দিয়ে নির্বাচিত হয়ে সে মোতাবেক কাজ করে না। তারা নির্বাচনের পর সব ভুলে যান।  

৬নং ওয়ার্ডের ভোটার সহকারি অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম রাজু বলেন, ভোট গণতান্ত্রীক ব্যবস্থাকে সুদিহর করা একটি শক্তিশালী মাধ্যম। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে সুসংহতি করতে একটি সুষ্ট সুন্দর অবাধ নিরপেক্ষ ভোটের ব্যবস্থা কোন বিকল্প নেই। আমি আশা করি যোগ্য সৎ ব্যক্তিকেই ভোট দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।