এম এ আলিম রিপন,সুজানগর(পাবনা)ঃ প্রথমে দেখলেই যে কারো মনে হতে পারে এটি কোনো ময়লা আবর্জনা রাখার নির্ধারিত স্থান অথবা স্থানীয় ঠিকাদারদের নির্মাণ সামগ্রী রাখার জায়গা। আসলে তা নয়,এটি সুজানগর পৌরসভার নতুন বাস টার্মিনাল। সুজানগর পৌর শহরের যানজট নিরসন এবং পরিকল্পিত পরিবহন ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে গত ৪ বছর আগে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় এই নতুন বাস টার্মিনালটি। কয়েক বিঘা জায়গা জুড়ে অবস্থিত এই বাস টার্মিনালটি উদ্বোধনের ৪ বছর পরও বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কোন ধরণের যানবাহন প্রবেশ না করায় ধুলোর আস্তরণে ঢাকা পড়েছে টার্মিনাল ভবনের রুমগুলো। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া নির্মিত বাসস্ট্যান্ডটি বর্তমানে কোন কাজেই আসছেনা। অথচ দীর্ঘদিন ধরে অযতœ-অবহেলায় পড়ে থাকলেও কার্যকরী কোন ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আর এ নিয়ে সাধারণ মানুষদের মধ্যে ক্ষোভের যেন শেষ নেই। সুজানগর পৌরসভা সুত্রে জানা গেছে, শহরের পৌর বাজার সড়ক ও স্থানীয় মুজিব বাধের মাঝে স্থানীয় চরসুজানগর এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ ১৯(উনিশ)টি পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এই বাস টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়। এটি নির্মাণে খরচ হয় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। যাত্রিদের সুবিধা বিবেচনা করে সেখানে বিশ্রামঘর,গৌচাগার,টিকিট কাউন্টার সহ অন্যান্য ব্যবস্থা করা হয়। ২০১৩ সালে টার্মিনালটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কাজ শেষ হওয়ার পর ২০১৮ সালে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। পরে বাস টার্মিনালটি আলোকিত করার জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে বসানো হয় ১০টির অধিক সোলার প্যানেল। কিন্তু এখন বাসস্ট্যান্ডে আলোতো জলেই না,উল্টো সোলার প্যানেলগুলোর কোন হদিস নেই। উদ্বোধনের পরদিন থেকেই কোন যানবাহন প্রবেশ না করায় সেখানে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বসে মাদকসেবিদের আড্ডা। সরেজমিন দেখা যায়,দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় নষ্ট হচ্ছে অবকাঠামো। টার্মিনালের পার্কিং এলাকায় স্থানীয় বিভিন্ন ঠিকাদারেরা বালু পাথর,বিটুমিনসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রেখেছেন। টার্মিনালের মেঝের টাইলস ভেঙে গেছে । আর টার্মিনালে ব্যবহারকৃত বিভিন্ন লোহার সামগ্রী চুরি হয়ে গেছে উদ্বোধনের ৬ মাসের মধ্যেই। সুজানগরের প্রবীন সাংবাদিক আব্দুস শুকুর জানান, টার্মিনালে কোন যানবাহন না আসায় দুই বছর আগে এখানে কোরবানির ঈদে পশুর হাট বসেছিল।এরপর আর টার্মিনালে হাটও বসেনি। সুজানগর-পাবনা মোটর চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রমেন্দ্র নাথ কুন্ডু জানান, চালক ও সাধারণ মানুষ সেখানে যেতে চান না। অপরিকল্পিত ভাবে পৌর কর্তৃপক্ষ এটি নির্মাণ করেছে যার ফলে এই অবস্থা। সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন সুজানগর পৌর শহরের বাইপাস সড়কটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংস্কার করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করলে সুজানগর পৌর শহরের যানজট যেমন নিরসন হবে, তেমনি প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন পৌর বাস টার্মিনালটিও সচল করা সম্ভব হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। পৌর মেয়র রেজাউল করিম রেজা বলেন, আগের মেয়র টার্মিনালটি নির্মাণ করেছিলেন। বাস মালিক,চালক,পৌর পরিষদ,স্থানীয় লোকজন ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের মতামত নিয়ে পৌর বাসটার্মিনালটি সচল করতে অতি দ্রæতই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করবেন বলে জানান ।