সাঁথিয়া প্রতিনিধি: সাঁথিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার হেলাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সামাজিক মর্যাদা নষ্ট করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। ঐ মহলটি অনৈতিক সুযোগ না পেয়ে দীর্ঘ দিন ধরে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার সুযোগ খুঁজছিল। হেলাল উদ্দিনের দাবি তিনি কোন প্রকার অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত নয় এবং অনৈতিক কোন সুযোগ সুবিধা নেন না। তথাপিও আমার বিরুদ্ধে ঐ মহলটি দুর্ণীতি দমন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছে।
প্রাথমিকের অধিকাংশ শিক্ষক ও কর্মকর্তারা দাবি করেন হেলাল উদ্দিন একজন নীতিবান ও আদর্শবান শিক্ষা অফিসার। তার থেকে অনৈতিক সুযোগ সুবিধা ও অনিয়ম করতে না পেরে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে স্বার্থনেষী মহলটি।
শিক্ষা অফিসার তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগে বলেন, বিল প্রস্তুতকারী নব নিয়োগপ্রাপ্ত ক্লার্কের অজ্ঞতা কারণে অসতর্কতাবসত ২০২০-২১,২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থ বছরে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নামে বরাদ্দকৃত মোটর সাইকেলের জ্বালানী ও মেরামতের জন্য নির্ধারিত বরাদ্দের অতিরিক্ত যে অর্থ উত্তোলিত হয়েছিল তা যথাসময়ে ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে। যার চালান নং ০৫ ও ০৩। তারিখ: ১৪/০১/২৪ইং ও ১৪/১১/২৪ইং।কোড নং ১২৪৩১০০০০২৬৭১ ও ১২৪৩১০০০০২৬৭১।
২০২১-২২ অর্থ বছরে ৯২ নং চরকাবারীকোলা সপ্রাবি নামে ক্ষুদ্র মেরামত বাবদ ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ ছিল।কিন্তু স্থানীয় সমস্যার কারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ টাকা ব্যয় করতে ব্যর্থ হওয়ায় সমুদয়টাকা ট্রেজারী চালানের মাধ্যমে কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে।যার চালান নং টি১। তারিখ:০২/০৯/২০২৪ইং।কোড নং ১২৪৩১০০০০২৬৭১।
শিক্ষকদের ভ্রমণভাতা বাবদ ২০২১-২২ অর্থ বছরে ১,৮৯,৯০০/-টাকা,২০২২-২৩ অর্থ বছরে ১,৯০,০০০/-টাকা,২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৩,৮০,০০০/-টাকা ভ‚য়া ভাউচার দিয়ে উত্তোলনের যে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে তা মোটেও সত্য নয়। শিক্ষকদের দাখিলকৃত বিলের বিপরীতেই টাকা উত্তোলন করা হয়েছে এবং শিক্ষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
প্রায় ৭৫০ জন সহকারী শিক্ষকের বকেয়া বিল প্রাপ্ত হয়। এ বিল তৈরির জন্য যাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা রয়েছে এমন ০৬ জন শিক্ষককে বিল প্রস্তুত করার জন্য শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষরে অফিস আদেশ করে দেয়া হয়েছিল বলে তিনি জানান। যদি এখানে অনিয়মের কোন ঘটনা ঘটে থাকে তার দায়ভার বিল প্রস্তুতকারী ও বিল গ্রহণকারীর উপর বর্তায়।
গোপনে নিলাম করার অভিযোগ প্রসংগে শিক্ষা অফিসার জনাব মো: হেলাল উদ্দিন বলেন, নিলাম কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার।উপজেলা প্রকৌশলী,সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও এসএমসির সভাপতি উক্ত কমিটির সদস্য এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার সদস্য সচিব। তাই নিলাম বিজ্ঞপ্তি গোপন করে সরকারি নিয়ম বহিভর্‚তভাবে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে একা গোপনে নিলাম করার কোন সুযোগ নাই। তিনি আরও বলেন, তার যোগদানের পূর্বে শিক্ষা অফিসে কোন আইপিএসই ছিলনা। তার সময়ে আইপিএস এর ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং বর্তমানে ব্যাটারীসহ তা সম্পূর্ণ সচল আছে।
উপজেলা পরিষদের নতুন ভবন নির্মাণের পর অনেক দূর থেকে সংযোগ নেয়ার কারনে প্রচুর তার,কিছু যন্ত্রাংশ ও নতুন সেট ক্রয় করার জন্য টাকা ব্যয় করা হয়েছে বলে শিক্ষা অফিসার দাবী করেন। এছাড়া কোন অবৈধ বিল উত্তোলন করা হয় নাই।
শিক্ষা অফিসার বলেন, বিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দকৃত কোন সরকারি অর্থ উপজেলা শিক্ষা অফিসারের ব্যক্তিগত একাউন্টে জমা করার কোন সুযোগ নাই এবং তাহা কোন দিন করাও হয় নাই।উন্নয়নমূলক কিছু বরাদ্দের অর্থ বিল পাসের পর সরকারি নিয়ম অনুযায়ী উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সরকারি একাউন্টে জমা হয়।সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এবং উপজেলা শিক্ষা কমিটির সিদ্ধান্তমোতাবেক কাজ শতভাগ সন্তোষজনকভাবে সম্পাদনের পর ব্যয়িত অর্থের চেক প্রদান করার সরকারি লিখিত নির্দেশনা রয়েছে।কাজ করার পূর্বে চেক প্রদান করার কোন সুযোগ নাই
মূলতঃ অফিসের সহকারী শিক্ষা অফিসার সুলতান আহমেদ ও অফিস সহকারী আরিফুল ইসলাম তার কাছে অনৈতিক সুযোগ সুবিধা আদায় করতে না পেরে অফিসিয়াল শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে অফিসের গোপনীয় কাগজপত্র সরবরাহ করে। এ গোপনীয় কাগজপত্র নিয়ে কথিত শিক্ষক সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম রিপন ও সাধারণ সম্পাদক আলতাব হোসেন গং দুর্ণীতি দমন কমিশনসহ পত্র পত্রিকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করে সামাজিকভাবে হেও পতিপন্ন করার চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাটগাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আলতাব হোসেন বলেন, স্যারের সাথে আমি দীর্ঘ প্রায় ৫ বছর ধরে তার অধিনে চাকুরী করেছি। আইনের পরিপন্থি কোন কাজ করতে দেখিনি। টাকা পয়সার ব্যাপারে যার কোন লোভ লালসা নেই, সে কেমন করে দুর্ণীতি করতে পারে তা আমার বোধগম্য নয়। পুন্ডুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। স্যারকে সরিয়ে অনৈতিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। পাইকশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নুরুন্নবী কানন বলেন স্যারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গুলো সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমার জানামতে তিনি কারও কাছে অনৈতিক সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করেননি। অভিযোগগুলোর বিষয়ে শিক্ষা অফিসার মোঃ হেলাল উদ্দিন বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের স্বীকার। তাদের অনৈতিক সুযোগ সুবিধা না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে সু পরিকল্পিতভাবে অভিযোগ দিয়েছেন যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন