২০শে জুলাই, ২০২৫ 🔻 ৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২🔻 ২৪শে মহর্‌রম, ১৪৪৭

খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা ভেস্তে দিলো ওয়াশিংটন: মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনায় নতুন মোড়

শেয়ার করুন:

বিশ্বরাজনীতির উত্তপ্ত অঙ্গনে হঠাৎই ঝড় তুলেছে একটি গোপন পরিকল্পনা। জানা গেছে, ইসরায়েল গোপনে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার প্রস্তুতি নিয়েছিল। কিন্তু চূড়ান্ত মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই পরিকল্পনায় ‘না’ বলে দেন। একটিবার ভাবুন, মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ধর্মীয় নেতাকে হত্যা করলে বিশ্ব পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াত!

ইসরায়েলি গোয়েন্দা তৎপরতা ও খুনের পরিকল্পনা
যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি মিডিয়ার বরাতে জানা যায়, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা “রাইজিং লায়ন” নামে একটি গোপন মিশনের আওতায় খামেনিকে হত্যার সুযোগ তৈরি করেছিল। তারা সেই পরিকল্পনা হোয়াইট হাউসে পৌঁছায়। ট্রাম্পের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু ট্রাম্প সরাসরি তা প্রত্যাখ্যান করেন। তাঁর ভাষায়, “যতক্ষণ না ইরান সরাসরি কোনো মার্কিন নাগরিককে হত্যা করে, ততক্ষণ একজন রাষ্ট্রনেতাকে খুন করার অনুমতি দেওয়া সঠিক হবে না।”

এই বক্তব্য অনেকের কাছে অদ্ভুত লাগলেও, এটি যে কতটা কৌশলী ছিল, তা এখন টের পাওয়া যাচ্ছে। খামেনিকে হত্যা করা হলে হয়তো ইরানের প্রতিশোধ শুধু ইসরায়েল নয়, সমগ্র পশ্চিমা জগতের ওপর ছড়িয়ে পড়ত। আর একবার যুদ্ধ শুরু হলে কে কখন থামাবে?

কেন ট্রাম্প ‘না’ বললেন?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা আছে অনেক। কিন্তু এই ঘটনায় তিনি দেখালেন, কখনো কখনো “পেছনের পা” দেওয়াটাই সবচেয়ে সাহসী সিদ্ধান্ত। বিশ্লেষকদের মতে, তিনি একদিকে যুদ্ধের বিপর্যয় এড়ালেন, অন্যদিকে নিজের কূটনৈতিক অবস্থানকে তুলে ধরলেন—যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে খুনের মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করতে চায় না।

বিশ্ব রাজনীতির উত্তাল সমুদ্রে ট্রাম্পের এই ‘না’ আসলে একপ্রকার শান্তির বার্তা হয়ে উঠল।

ইসরায়েলের অস্বীকার এবং বাস্তবতা
ইসরায়েল বরাবরের মতোই তাদের ওপর ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এটিকে ‘পুরোপুরি মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদনে এ পরিকল্পনার সত্যতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

ভবিষ্যতের আশঙ্কা ও আশাবাদ
মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েলের উত্তেজনা নতুন কিছু নয়। কিন্তু একজন শীর্ষ ধর্মীয় নেতার হত্যার পরিকল্পনা নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন চাপে ফেলে দিয়েছে। এমনকি এটি বিশ্বযুদ্ধের আগুনেও ঘি ঢালতে পারত। ট্রাম্প সেই আগুনে পানি ঢেলে দিয়ে হয়তো ইতিহাসের এক ভয়ঙ্কর অধ্যায় রুখে দিয়েছেন।

উপসংহার
ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত নিছক একটি কাগজে সই না, বরং এটি ছিল যুদ্ধ ও শান্তির মাঝখানের এক সূক্ষ্ম সেতুবন্ধন। হয়তো ভবিষ্যৎ ইতিহাস একে মূল্য দেবে। হয়তো এই একটি ‘না’ অনেক জীবনকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছে।