২০শে জুলাই, ২০২৫ 🔻 ৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২🔻 ২৪শে মহর্‌রম, ১৪৪৭

জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার পথে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

শেয়ার করুন:

কমিশনিং সম্পন্ন, প্রস্তুতির চূড়ান্ত ধাপে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প

পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রস্তুতিপর্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অতিক্রম করেছে। প্রথম ইউনিটের প্রধান ও সহায়ক ট্রান্সফর্মারগুলোর কমিশনিং সম্পন্ন হওয়ায় কেন্দ্রটি এখন জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে পৌঁছেছে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক প্রতিষ্ঠান রসাটমের মিডিয়া উইং এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের (NPBCL) শীর্ষ কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ট্রান্সফর্মার কমিশনিং সফলভাবে শেষ
নিউক্লিয়ার পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. জাহেদুল হাসান জানান, প্রথম ইউনিটের টারবাইন জেনারেটরে উৎপাদিত ২৪ কেভি বিদ্যুৎকে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহের জন্য ৪০০ কেভিতে রূপান্তর করতে সক্ষম প্রধান ট্রান্সফর্মারগুলোর কমিশনিং সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি ট্রান্সফর্মারের ধারণক্ষমতা ১,৫৯৯ মেগাওয়াট পর্যন্ত, যা ইউনিটের ১,২০০ মেগাওয়াট উৎপাদনের চেয়ে অনেক বেশি। এতে ভবিষ্যতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সঞ্চালনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

প্রত্যেকটি ট্রান্সফর্মারের ওজন প্রায় ৪০০ টন, আর সংযোগ স্থাপনে ব্যবহার হয়েছে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার ক্যাবল। একই সঙ্গে সহায়ক ট্রান্সফর্মারগুলোর কমিশনিংও শেষ হয়েছে, যেগুলো দ্বৈত উৎস (জাতীয় গ্রিড ও জেনারেটর) থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহে সক্ষম।

নিরাপত্তার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব
এতমস্ত্রয়এক্সপোর্টের বাংলাদেশ প্রকল্পের ভাইস-প্রেসিডেন্ট আলেক্সি ডেইরী বলেন, “এই মাইলফলক অর্জন সংশ্লিষ্ট সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও পেশাদারিত্বের ফল। চ্যালেঞ্জিং আবহাওয়া ও লজিস্টিক সংকট মোকাবিলা করেও কাজটি সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, সামনে ‘হট মিডিয়া টেস্ট’সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা পরীক্ষা চালানো হবে। এসব পরীক্ষার অংশ হিসেবে অস্থায়ীভাবে বাষ্প নির্গত হতে পারে, যা জনসাধারণের জন্য ক্ষতিকর নয় এবং পূর্বপরিকল্পিত। রসাটম আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মান অনুসরণ করে কাজ করে যাচ্ছে।

দুটি চুল্লি, ২,৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা
রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় নির্মিত রূপপুর প্রকল্পে দুটি তৃতীয় প্রজন্মের ভিভিইআর-১২০০ চুল্লি স্থাপন করা হয়েছে, প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা ১,২০০ মেগাওয়াট। প্রকল্পের জেনারেল কন্ট্রাকটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে রসাটমের প্রকৌশল বিভাগ।

এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।