গত শনিবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে জামায়াতের আমীর তাজুল ইসলামকে ‘মুক্তিযোদ্ধা গণসংবর্ধনা’ দেওয়া হয়। তিনি একজন হোমিও প্যাথিক চিকিৎসক আর শরীফপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর।সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নারী সংসদ সদস্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের উম্মে ফাতেমা নাজমা আক্তার (শিউলী আজাদ)। এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ঘিরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মাঝে।স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, জামায়াতের ওই আমীরকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তরুণ শিল্পপতি মো. বিল্লাল ভূঁইয়া।
এতে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে বক্তব্য করেন- ডা. ফয়েজ আহমদ ফুল মিয়া, এ.কে.এম ছাদির, মো. ছানাউল্লাহ, তাজুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান হাফ মিয়া, ইউপি সদস্য মো. ইকবাল হোসেন, ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি মোজ্জামেল হক তপন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক রায় ভৌমিক, আশুগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সদস্য মো. সাজিদুল ইসলাম সাচ্চু মাস্টার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জামায়াত নেতার সঙ্গে শরীফপুর ইউনিয়নের অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রয়াতদের পরিবারের হাতে ক্রেস্ট এবং ফুলেল শুভেচ্ছা দেওয়া হয়।
জানা যায়, এই ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় ৭৪ জনের নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ৪৩ জন।
স্থানীয়রা জানান, সংবর্ধনার আয়োজক শরীফপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুদ্দিন চৌধুরী বেশ কয়েক বছর আগে বঙ্গবন্ধুর ছবি প্রকাশ্যে ছেঁড়ার অপরাধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আসামি হয়েছিলেন। ওই মামলা থেকে বাঁচতে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
শরীফপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ শরীফ হোসেন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক জামায়াত নেতাকে গণসংবর্ধনা দেওয়ার ঘটনা নিন্দনীয়। এ ঘটনায় সর্বত্র সমালোচনা হচ্ছে। অনুষ্ঠানের ব্যাপারে চেয়ারম্যান আমাদেরকে কিছু বলেননি। জনগণের তেমন কোন সম্পৃক্ততা ছিল না অনুষ্ঠানে। সেখানে তার পরিষদের কিছু সদস্য ও নিজেদের লোক নিয়েই অনুষ্ঠানটি করেছেন। আর এমপি শিউলি আজাদ এখানে এসেছেন, তিনিও আমাদের কিছু জানাননি। জনপ্রতিনিধিদের আচরণ এমন হওয়া উচিৎ নয়।