সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান টিপুকে দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য সংগ্রহের সময় ১০ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ইউএনও শেখ মো. রাসেল। তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এ রায় দেন। ঘটনাটি ২২ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে ঘটে।
রোকনুজ্জামান টিপু তালা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের ৯ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করতে যান। এ সময় তালা উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলম তথ্য দিতে অস্বীকার করেন এবং সাংবাদিকের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি ইউএনওকে জানালে তিনি সরেজমিনে উপস্থিত শ্রমিকসহ স্থানীয়দের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ১৭৬ ধারায় ১০ দিনের সাজা দেন।
রোকনুজ্জামান টিপু বলেন, ‘কাজের মান খারাপ হচ্ছে, কাদা মেশানো খোয়া দেওয়া হচ্ছে, সিমেন্ট কম দেওয়া হচ্ছে’— এমন খবরের ভিত্তিতে তিনি তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। এ সময় উপ-সহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলম তাকে কোনো সহযোগিতা না করে বলেন, ‘তুই জানার কে?’ এরপর ছাতা দিয়ে মারতে শুরু করেন। তিনি প্রতিরোধ করতে গেলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
ইউএনও শেখ মো. রাসেল বলেন, ‘একজন সাংবাদিক আমার একজন কর্মকর্তাকে মারধর করেছে’— এমন খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত শ্রমিকদের সাক্ষ্যগ্রহণ করে ঘটনার সত্যতা পান। এজন্য অভিযুক্তকে ১৭৬ ধারায় ১০ দিনের সাজা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ রায়কে ‘সাজানো নাটক’ বলে অভিহিত করেছে। সংগঠনটি প্রশ্ন রেখেছে, ভ্রাম্যমাণ আদালতস্থলে যারা উপস্থিত ছিলেন, তারা কি কেউ নিরপেক্ষ ছিলেন? মামলার সঙ্গে জড়িত সবাই ঠিকাদারের শ্রমিক এবং প্রশাসনের লোক। প্রশাসনের উচিত ছিল ঘটনার নিরপেক্ষতা বজায় রেখে ব্যবস্থা নেওয়া, কিন্তু তারা তা না করে সাংবাদিকদের সঙ্গে দীর্ঘদিনের দূরত্বের ঝাল মিটিয়েছেন।