অলোক কুমার আচার্য্য, বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধিঃ বন্যার কারণে পাবনার বেড়া উপজেলায় গো খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। চড়া দামে গোখাদ্য কিনতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খামারি ও কৃষকেরা। এমন পরিস্থিতিতে কচুরিপানাসহ স্বল্পমূল্যের বা বিনামূল্যের গোখাদ্যের দিকে ঝুঁকছেন গরু পালনকারীরা। কিন্তু এতে গরুগুলোর স্বাস্থ্যহানি ঘটার পাশাপাশি দুধ উৎপাদন ব্যপক কমে গেছে।
গরু পালনকারীরা জানান, বন্যার কারণে সব ধরনের গো খাদ্যের দাম এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছে। ২০০ টাকা মণের ধানের খড় এখন বেড়ে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা হয়েছে। বেড়েছে খেসারির ভূষি,গমের ভূষির দাম। এছাড়া বন্যার কারণে কাঁচা ঘাস একেবারেই মিলছে না। গরু পালনকারীরা জানান, কচুরিপানাসহ অন্যান্য বিকল্প খাদ্য গরুকে খাওয়ানো হলে তাতে গরুর দুধ দেওয়ার ক্ষমতা যেমন কমে যাচ্ছে তেমনি গরুর স্বাস্থ্যহানিও ঘটছে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বন্যা ও বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতায় জেলার প্রতিটি উপজেলায় গো-চরণভ’মি পানির নিচে থাকায় গো-খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। যে সব জমিতে উন্নত জাতের ঘাসের আবাদ করতে না পারায় কাঁচা ঘাসের অভাব প্রকট আকার ধারণ করেছে। যা খামারি ও কৃষকদের দুধ উৎপাদনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে জেলার বেড়া, সাঁথিয়া,সুজানগর, ফরিদপুর উপজেলার খামারি ও কৃষকদের গো-খাদ্যের সমস্যা ব্যাপক আকার ধারণ করছে।
সাঁথিয়া উপজেলা সদরের গো-খাদ্যেও বৃহৎ বাজার ইছামতি নদীর বাঁধে বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা যায়, ১মন খড় ৫৫০ টাকা বিক্রয় হচ্ছে। থড় কিনতে আসা কৃষকরা জানান, খড়ের যে মূল্য তাতে আমাদের উচিত গরু বিক্রয় করে দেওয়া। কিন্তু বাব দাদার আমল থেকে আসা পশু পালন কেমন করে ছেড়ে দেই। বাধ্য হয়ে বেশি দাম দিয়ে খড় কিনতে এসেছি।
বেড়া পৌরসভার আমাইকোলা গ্রামে অবস্থিত দুধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান সেফ মিল্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ শেখ ও ইছামতী ফুড অ্যান্ড ডেইরি প্রোডাক্টের (পিওর মিল্ক) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রউফ জানান, বন্যার প্রভাবে গো খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। এতে অনেক খামারিই তাদের গরুগুলোকে ঠিকমতো গোখাদ্য খাওয়াতে না পারায় দুধের উৎপাদন অনেক কমে গেছে। খামারিদের কাছ থেকে আগের তুলনায় অর্ধেক দুধ পাওয়া যাচ্ছে।