২০শে জুলাই, ২০২৫ 🔻 ৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২🔻 ২৪শে মহর্‌রম, ১৪৪৭

পাবনা পৌর সভার মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন জমা দিলেন সোহেল হাসান শাহীন

শেয়ার করুন:

শহর প্রতিনিধি :আসন্ন পাবনা পৌর সভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সোহেল হাসান শাহীন। গতকাল বুধবার বিকালে ঢাকায় আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। এসময় জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি আব্দুল হামিদ মাষ্টার, কোষাধক্ষ্য আব্দুল হান্নান, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোশারোফ হোসেন, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি শরীফ উদ্দিন প্রধানসহ বিপুল সংখ্যাক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

আগামী ৩০ জানুয়ারী পাবনা পৌর সভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পৌর নির্বাচনকে নিয়ে এখন পৌর এলাকার প্রতিটি মহল্লা ও ওলিগলির চায়ের দোকানে চলছে আলোচনা। পাবনা পৌরসভা এলাকায় কার জনপ্রিয়তা কত, দল কাকে মনোনয়ন দিতে পারে এইসব নিয়ে ভোটারদের আলোচনায় সবচেয়ে এগিয়ে সোহেল হাসান শাহীনের নাম।
ভোটাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,  পাবনা পৌরসভা নির্বাচনে পৌরবাসীর আকাঙ্খা সোহেল হাসান শাহীনকে নিয়ে। একজন শিক্ষিত সৎ জনবান্ধব ও সজ্জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পাবনার সকল শ্রেণী মহলে শাহীনকে নিয়ে রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ ও আলোচনা। আওয়ামীলীগের তৃণমূল থেকে উঠে আসায় পৌরবাসীর কাছে শাহীন একটি জনপ্রিয় ও বিশ^স্ত নাম। পাবনাবাসী দেখেছে দলের চরম দুর্দিনে সামনের সারিতে থেকে শাহীনকে নেতৃত্ব দিতে।
 ১৯৮৭-৯৩ সাল পর্যন্ত তিনি পাবনার এডওয়ার্ড বিশ^বিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮-১৯৮৯ সাল ও ১৯৯০-১৯৯১ সালে আওয়ামীলীগের দুঃসময়ে ও রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেও ছাত্রলীগের প্রার্থী হিসেবে এডওয়ার্ড বিশ^বিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদেও নির্বাচনে সাধারণ ছাত্র/ছাত্রীদের ভোটে জিএস ও ভিপি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। যা পাবনা ছাত্রলীগের ইতিহাসে আজও স্মরণীয় একটি অধ্যায়। এছাড়াও ১৯৮৭-৯৪ সালে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সম্পাদক। ১৯৯৪-৯৮ সাধারণ সম্পাদক ও ১৯৯৮-২০০৪ পর্যন্ত তিনি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি’র দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪-২০১৫ ও ২০১৫ সাল থেকে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের দ্বিতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
দলের প্রতিটি স্তরে দায়িত্ব পালন কালে তিনি যেমন সততা, যোগ্যতা ও দক্ষতার স্বাক্ষ্যর রেখেছেন, তেমনি সাধারণ মানুষের সাথে গড়ে তুলেছেন নিবীড় সম্পর্ক আর ভালোবাসার বন্ধন।
এছাড়াও তিনি পাবনা শহরের ঐহিত্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাধানগর মজুমদার একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ, শহীদ এম মনসুর আলী কলেজ ও আতাইকুল ইউনিয়নের সড়াডাঙ্গী ফাজিল মডেল মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্ব পালন কালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার মান ও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নে তার আন্তরিক প্রচেষ্টা ও কর্মদক্ষতা সাধারণ মানুষের কাছে প্রশংসনীয় হয়েছে।
গত পৌর নির্বাচনের সোহেল হাসান শাহীন’র নাম ছিলো পৌরবাসীর মুখে মুখে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় ভোটারদের ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায়।
এ ব্যাপারে পৌর বাসিন্দা আরতী রাণী বলেন, শাহীন ভাই অনেক ভালো একজন মানুষ। আমরা তাকে খুব ভালোবাসী। তিনি আরও বলেন, আমরা গরীব মানুষ শাহীন ভাইয়ের কাছে খুব সহজেই যেতে পারি। তার দরজা সব সময় সবার জন্য খোলা থাকে। তিনি সব সময় আমাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং আমাদের সব সময় সাহায্য সহযোগিতা করেন। করোনার সময়ে শাহীন ভাই আমাদেরকে সাহায্য করেছেন। গত পৌর নির্বাচনেও শাহীন ভাইয়ের নির্বাচন করার কথা শুনেছিলাম মানুষের মুখে মুখে। আমরাও খুব খুশি হয়েছিলাম শাহীনকে ভোট দিবো ভাই মেয়র হবে। কিন্তু পরে শুনলাম দল তাকে নির্বাচন করার অনুমতি দেয় নাই। কথাটা শুনে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। আশাকরি দল এবার নিশ্চয় শাহীন ভাইকে পৌরসভা নির্বাচন করার অনুমতি দিবে।
এ ব্যাপারে সোহেল হাসান শাহীন’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, একেবারে তৃণমূল থেকে আমার রাজনীতি শুরু। এরশাদ সরকার, জামায়াত-বিএনপি সরকারের অনেক অত্যাচার নির্যাতনের মধ্যেও আন্দোলন সংগ্রামের প্রথম সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। আজকে আমি পাবনা সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক’র দায়িত্ব পালন করছি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে একটা বিষয়ে সব সময় উপলব্ধি করেছি যে, একজন রাজনৈতক কর্মী সবচেয়ে বড় কাজ হলো সাধারণ মানুষের সাথে একটা নিবীড় সম্পর্ক তৈরি করা। আর প্রয়োজনে সাধ্য মতো তাদের পাশে থাকা। তাই যখন সুযোগ হয়েছে তখনই মানুষের কাছে গিয়েছি। আমি ১৯৮৮ ও ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এডওয়ার্ড বিশ^বিদ্যালয় কলেজের নির্বাচিত জিএস ভিপি ছিলাম। তখন আওয়ামী লীগের চরম দুঃসময়। ছাত্র সংসদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কলেজের প্রতিটা ছাত্র-ছাত্রীর বাড়ির দরজায় গিয়েছি ভোট চেয়েছি, তাদের অভিভাবকদের সাথে কথা বলেছি, তাদের ভালোবাসা পেয়ে বিপূল ভোটে নির্বাচিত হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। বর্তমানে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করায়, মানুষের কাছে যাওয়ার সুযোগ আরও অনেক বেশি পেয়েছি। গত পৌর নির্বাচনেও আমি প্রার্থী ছিলাম। দল আমাকে মনোনয়ন দেয় নাই কিন্তু আমার প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ, ভালোবাসা, আস্থা, বিশ^াস দেখে আমি অভিভুত হয়েছি এবং আমি মনে করি এটাই আমার রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে অনুপ্রেরণা, সবচেয়ে বড় সম্পদ।
আওয়ামীলীগের একজন কর্মী হিসেবে সব সময় চেষ্টা করি মানুষের সাথে আমার এই সম্পর্ক এই যোগাযোগ ধরে রাখতে এবং আমার প্রতি তাদের আস্থা ভালোবাসা ও ভরসার মর্যাদা দিতে। এবারে আমি পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের প্রতি সব সময় আস্থাশীল। দলীয় প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি সবকিছু বিচার বিবেচনা করে আমাকে যোগ্য মনে করে নৌকা প্রতীক দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে পাবনা সদর পৌরসভায় নির্বাচন করার সুযোগ দেন তাহলে ইনশাল্লাহ পৌরবাসীর ভোটে নির্বাচিত হয়ে সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে সাথে নিয়ে সততা ও নিষ্ঠার সাথে পৌরবাসীর নাগরিক সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি ও সমস্যা সমাধানে চেষ্টা চালিয়ে যাবো এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অম্প্রদায়িক উন্নত সোনার বাংলা নির্মাণে শেখ হাসিনার কাজ এগিয়ে নেবো।