১৪ই জুলাই, ২০২৫ 🔻 ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২🔻 ১৮ই মহর্‌রম, ১৪৪৭

পিতা-মাতার বিচ্ছেদ, পরিবারে অবহেলা—সব শেষে গাছে ঝুলে মাহিনের শেষ বিদায়

শেয়ার করুন:

পাবনার কাশিনাথপুর ইউনিয়নের কাবারিকোলা গ্রামে মাহিন খান টুটুল (১৭) নামে এক কিশোর গাছের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। নিহত মাহিন ওই গ্রামের মিঠুন খান মিঠুর ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাহিনের পিতা-মাতার বিচ্ছেদের পর তার মা অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এবং বাবা ঢাকায় চলে যান। মাহিনও কিছুদিন ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। পরে গ্রামের বাড়িতে ফিরে এলে দাদা-দাদি ও চাচারা তাকে সহ্য করতে পারতেন না। কখনো কখনো তার জন্য খাবারও রান্না করা হতো না। খালা নিয়মিত খাবার পাঠাতেন এবং কখনো নিজের বাড়িতে রাখার চেষ্টাও করতেন।

সব মিলিয়ে এই কিশোর মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। পারিবারিক অবহেলা, ভালোবাসার অভাব ও পিতা-মাতার বিচ্ছেদের দগদগে যন্ত্রণায় হতাশ হয়ে মাহিন নিজের বাড়ির পাশের একটি গাছে গলায় ফাঁস দেন।

মাহিনের কাকা ইমন খান বলেন, “সে আমার সাথে থাকতো। খুবই নম্র ও ভদ্র ছেলে ছিল। পারিবারিক কলহ ও অবহেলা মেনে নিতে না পেরে সে আজ এই পথ বেছে নিয়েছে।”
আত্মহত্যার আগে মাহিন তার এক বন্ধুকে একটি হৃদয়বিদারক বার্তা পাঠান, যা তার ভেতরের ক্ষতের গভীরতাই প্রকাশ করে।

ঘটনার খবর পেয়ে কাশিনাথপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোস্তফা কামাল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবার ও স্থানীয়দের সহায়তায় মাহিনের মরদেহ উদ্ধার করেন। বর্তমানে লাশটি নিজ বাড়িতে রয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকেই বলছেন, এই মৃত্যু শুধুমাত্র একটি কিশোরের নয়, এটি সমাজের এক নির্মম চিত্র। অবহেলা, অবজ্ঞা, পরিবার ভাঙনের জ্বালা—সব কিছু যেন মাহিনকে তাড়িয়ে নিয়ে গেছে মৃত্যুর পথে।