গতকাল শনিবার ভোর ৫টার দিকে পাবনা শহরের কাচারী পাড়াস্থ নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। গোলাম হাসনায়েন বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৯১ বছর। তিনি স্ত্রী, ২ ছেলে ও ২ মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। শনিবার বিকালে শহরের ভোকেশনাল স্কুল মাঠে নামাজে জানাজা শেষে আরিফপুর গোরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
গোলাম হাসনায়েন বৃহত্তর পাবনার উল্লাপাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে পাশ করেন। ১৯৬১ সালের ১০ এপ্রিল তিনি পাবনা জেলা বারে আইনজীবি হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৯ সালে উত্তরবঙ্গের স্পেশাল মার্শাল ল কোর্টের স্পেশাল পিপি হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের এ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভূক্ত হন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর গোলাম হাসনায়েন আজীবন আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭০ সালে জাতীয় নির্বাচনে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে উল্লাপাড়া আসন থেকে সদস্য (এমসিএ) নির্বাচিত হন।
তিনি ‘৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করা, প্রশিক্ষণ, অস্ত্র সংগ্রহসহ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের পরে ১৯৭২ সালের দেশের প্রথম সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭৭ সালে তিনি পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। আজীবন পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য সরকার তাকে ২০২১ সালের একুশে পদক প্রদান করেন।
তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য, সাবেক দুদক কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপপু, পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম লাল, জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন, পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোশারোফ হোসেন, পৌর মেয়র শরিফ উদ্দিন প্রধান, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলুর রহমান, শিক্ষাবিদ প্রফেসর শিবজিত নাগ, পাবনা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারন সম্পাদক কাজী মাহবুব মোর্শেদ বাবলাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন পৃথক পৃথক বিবৃতিতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।