২০শে জুলাই, ২০২৫ 🔻 ৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২🔻 ২৪শে মহর্‌রম, ১৪৪৭

চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনারের জট, ঈদের ছুটিতে খালাস কমে যাওয়ায় বাড়ছে চাপ

শেয়ার করুন:

চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনারের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। মে মাসে কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলমবিরতি ও পরিবহন ধর্মঘটে যে জাহাজজট তৈরি হয়েছিল, তা এখনও পুরোপুরি সামাল দেওয়া সম্ভব হয়নি। এর মাঝেই শুরু হয় ঈদুল আজহার টানা ছুটি। ছুটিতে বন্দর সচল থাকলেও পণ্য খালাসের হার ছিল অনেক কম। ফলে বন্দরে পণ্যবোঝাই কনটেইনারের স্তূপ এখন আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।

৮০ শতাংশ ধারণক্ষমতা পূর্ণ, বাড়ছে শঙ্কা
চট্টগ্রাম বন্দরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমানে বন্দরের কনটেইনার রাখার ৮০ শতাংশ জায়গা পূর্ণ হয়ে গেছে। এই হার প্রতি ঘণ্টায়ই বাড়ছে। ধারণক্ষমতার সীমা অতিক্রম করলে পণ্য খালাসে সময় বেশি লাগবে এবং সার্বিক বন্দর কার্যক্রম ব্যাহত হবে।

ঈদের ছুটিতে কনটেইনার জমেছে ১১ হাজার
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, ঈদের ছুটির আগে ৪ জুন বন্দরে আমদানি কনটেইনারের সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার (২০ ফুটের কনটেইনার)। ১৩ জুন সকালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজারে, অর্থাৎ মাত্র সাত দিনে জমেছে ১১ হাজার কনটেইনার।

ঈদের ছুটির ১০ দিনে বন্দরে এসেছে প্রায় ২৪ হাজার কনটেইনার। এর মধ্যে ব্যবসায়ীরা খালাস করেছেন মাত্র ৯,৫০০ কনটেইনার। বাকি সাড়ে ১৪ হাজার কনটেইনার এখনও বন্দরে পড়ে আছে।

কেন কমছে খালাসের হার?
বন্দর সচল থাকলেও কাস্টমস, বিএসটিআই, পশু-উৎপাদন অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কার্যক্রম সীমিত ছিল ছুটির সময়। ব্যবসায়ীদের অনেকে পণ্য খালাস করতে পারেননি পরিবহন সংকট ও লেবার ঘাটতির কারণে।

এক ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “পণ্য খালাস শুধু বন্দরের উপর নির্ভর করে না। কাস্টমসসহ একাধিক সংস্থার অনুমোদন লাগে। ছুটির মধ্যে এসব প্রক্রিয়া সীমিত থাকায় খালাস সম্ভব হয়নি।”

খালাস না বাড়লে সংকট ঘনীভূত হবে
বন্দরের তথ্যানুযায়ী, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন গড়ে চার হাজারের বেশি কনটেইনার খালাস হয়। কিন্তু ছুটির সময় এই হার নেমে এসেছে গড়ে ১,৩৭৭ কনটেইনারে। বন্দর কর্মকর্তারা বলছেন, দৈনিক খালাসের হার ৫ হাজারে না পৌঁছালে কনটেইনার জট কাটবে না।

জাহাজজট এখনও নিয়ন্ত্রণে
তবে ভালো খবর হলো, বন্দরে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর কাজ চলমান থাকায় রপ্তানি কার্যক্রমে বড় ধরনের সমস্যা হয়নি। ফলে জাহাজজটও তেমন বাড়েনি। ছুটি শুরুর আগে যেখানে ১৬টি জাহাজ জেটিতে ভেড়ার অপেক্ষায় ছিল, এখন তা নেমে এসেছে ১২টিতে।

বন্দরের মুখপাত্রের বক্তব্য
চট্টগ্রাম বন্দরের মুখপাত্র মো. নাসির উদ্দিন বলেন, “আমরা আগেই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম যাতে জট না হয়। তবে ব্যবসায়ীরা দ্রুত পণ্য খালাস না করলে চাপ বাড়বে। এর প্রভাব সার্বিক কার্যক্রমে পড়তে পারে।”