আন্তর্জাতিকভাবে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে ভারতের গুজরাট প্রদেশের আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। বৃহস্পতিবার (১২ জুন ২০২৫) দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিধ্বস্ত হয়। এতে বিমানটির ২৪২ জন যাত্রী এবং নিচের এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও কর্মরত ব্যক্তিসহ মোট ২৯১ জন নিহত হয়েছেন।
বিমানটি লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছিল। কিন্তু উঠার মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তীব্র শব্দ করে সেটি হঠাৎ করে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। এতে কাছাকাছি থাকা একটি ক্লিনিক, লাইব্রেরি এবং হোস্টেলের কিছু অংশ ধসে পড়ে। হতাহতদের মধ্যে রয়েছেন চিকিৎসক, ছাত্র ও স্থানীয় সাধারণ মানুষ।
এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় সব যাত্রী মারা গেলেও অলৌকিকভাবে বেঁচে যান একমাত্র যাত্রী, ব্রিটিশ-ভারতীয় ব্যবসায়ী বিষ্ণু কুমার রমেশ। তিনি বিমানের ১১-এ নম্বর সিটে বসা ছিলেন। উদ্ধারের পর তিনি জানান, উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই হঠাৎ একটি বিস্ফোরণ হয় এবং তারপরেই সব অন্ধকার। জ্ঞান ফিরে পান ধ্বংসস্তূপের মধ্যে।
ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকর্মীরা তৎপরতা শুরু করে। প্রায় ১৩০ জন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং নিহতদের দেহ শনাক্তের কাজ চলতে থাকে। ঘটনাস্থলে ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত সংস্থা (AAIB), মার্কিন NTSB ও ব্রিটিশ প্রতিনিধিরাও উপস্থিত হয়েছে।
এ ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। বোয়িং ও এয়ার ইন্ডিয়া এক যৌথ বিবৃতিতে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তদন্তে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
এই দুর্ঘটনা শুধু ভারতের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের বিমান চলাচল ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।