পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার পুরানচর গ্রামে এক ব্যতিক্রমী ঘটনার জন্ম দিয়েছেন মোছা: ইয়াসমিন আক্তার। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ ঘটিকায় তিনি একসাথে তিন কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। সাঁথিয়া সততা ক্লিনিকে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে এই সন্তানদের জন্ম হয়। তবে আনন্দঘন এই মুহূর্তটি দুঃখজনক মোড় নেয়, যখন জানা যায়—তিন নবজাতকের একজন জন্মের সময়ই মারা গেছে।
ইয়াসমিন আক্তারের স্বামী মো. ইকরাম হোসেন জানান, তাদের আগে আরও দুটি সন্তান রয়েছে—একজনের বয়স ১৩ বছর এবং অন্যজনের ১০ বছর। হঠাৎ করে তিন নবজাতকের আগমন তাদের জন্য যেমন আনন্দের, তেমনি এক সন্তানের অকালপ্রয়াণ তাদের দারুণ ব্যথিত করেছে।
সততা ক্লিনিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. রিতা খাতুন বলেন, “মোট তিনটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে। দুর্ভাগ্যবশত, একটি শিশু জন্মের সময়ই মারা যায়। তবে বাকি দুইজন নবজাতক সুস্থ আছে এবং তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। মা ইয়াসমিন আক্তারও এখন স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন।”
তিনি আরও জানান, এমন ঘটনা সাধারণত খুব কমই ঘটে থাকে। একসাথে তিনটি শিশুর জন্ম চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে বিশেষ নজর কাড়ে। “যেহেতু প্রসবটি স্বাভাবিক পদ্ধতিতে হয়েছে, তাই এটি আমাদের জন্যও ছিল একটি চ্যালেঞ্জিং এবং দায়িত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। সৌভাগ্যক্রমে মা ও দুই নবজাতকের শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে,” বলেন তিনি।
এই খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি হয়। অনেকে ক্লিনিকের সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন। প্রতিবেশীরা পরিবারটিকে অভিনন্দন জানান এবং নবজাতকদের সুস্থতা কামনা করেন।
এই ধরনের বিরল ঘটনা আমাদের সমাজে নতুন করে মাতৃত্ব ও সন্তান জন্মদানের গুরুত্বকে সামনে এনে দেয়। পাশাপাশি, চিকিৎসা ব্যবস্থা ও সমাজের সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তাও মনে করিয়ে দেয়।
এখন পর্যন্ত দুই নবজাতক ও তাদের মায়ের শারীরিক অবস্থা ভালো থাকলেও চিকিৎসকেরা পরবর্তী কয়েকদিন তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখবেন বলে জানিয়েছেন।
এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হলো, জীবন অনেক সময় একসাথে আনন্দ ও বেদনার ধরা দেয়। পরিবারটি এই কঠিন সময়েও নতুন জীবনের আশার আলো দেখে সামনে এগিয়ে যেতে চায়।