১৫ই জুন, ২০২৫ 🔻 ১লা আষাঢ়, ১৪৩২🔻 ১৮ই জিলহজ, ১৪৪৬

সুজানগরে নকল ইঞ্জেকশন পুশে কলেজ ছাত্রীর মৃত্যু, ফার্মেসী মালিককে জরিমানা

শেয়ার করুন:

সুজানগর প্রতিনিধি: পাবনার সুজানগরে নকল ইঞ্জেকশন পুশ করায় নিভে গেল কলেজ ছাত্রীর জীবন। সে উপজেলার দুলাই গ্রামের আ: রহমানের মেয়ে ও এডওর্য়াড কলেজের মাস্টার্সের ছাত্রী রিপা খাতুন(২৩)। স্কয়ার ওষুধ কোম্পানীর নকল ইঞ্জেকশন বিক্রয়ের অপরাধে সাঁথিয়ার কাশিনাথপুর কাওসার ফার্মেসীর মালিককে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যান আদালত।
জানাযায়, কলেজ ছাত্রী রিপা অসুস্থ হলে তার শরীরে ট্রাইফয়েড জ্বর ধরা পড়ে। বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ডাক্তার ইলিয়াস হোসেন রিপাকে স্কয়ার কোম্পানীর সেফট্রোন ইঞ্জেকশন ২গ্রাম আইভি শরীরে পুশ করার পরামর্শ দেন। চিকিৎসকের পরামর্শ মতে কলেজ ছাত্রীকে দুলাই বাজারের মেডিসিন পয়েন্ট থেকে ইঞ্জেকশন ক্রয় করে(যার ব্যাচ নং ছিল ৭ ডিজিটের) পুশ করা হয়। ২১ মে সকালে পূর্ণরায় একই ইঞ্জেকশন রিপার শরীরে পুশ করলে সে কিছুক্ষনের মধ্যে মৃত্যু বরণ করেন। পরে ইঞ্জেকশনটি পূর্বের ইঞ্জেকশনের সাথে মিল করলে তার ব্যাচ নং ( ৮ ডিজিটের) এর গরমিল পাওয়া যায়। ওই ইঞ্জেকশনটি মেডিসিন পয়েন্ট স্কয়ার কোম্পানীর এসআর হাবিবুর রহমান সরকারের নিকট থেকে গ্রহণ করেন। যা হাবিবুর রহমান কাশিনাথপুরের কাওসার ফার্মাসীর নিকট থেকে এনে দেন বলে মেডিসিন পয়েন্টের বিক্রয় প্রতিনিধি মৃদুল জানান।
কলেজ ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা স্কয়ার কোম্পানীকে অবগত করলে ২২ মে (বৃহস্পতিবার) কোম্পানীর পক্ষ থেকে পাবনা ড্রাগ সুপারকে বিষয়টি জানানো হয়। ড্রাগ সুপার রোকনুজ্জামান ্ওই দিনই বিয়টি সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী র্কমর্কতা রিজু তামান্না ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে কাওসার ফার্মাসীর মালিককে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
কলেজ ছাত্রীর কাকা ইমরান খান জানান, ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানায় আমরা আশাহত হয়েছি। কাওসার ফার্মাসী নকল ওষুধ বিক্রয় করে মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করছে। আমরা তার ব্যবসা বন্ধের দাবী জানাই।
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ডাক্তার ইলিয়াস হোসেন জানান, ইঞ্জেকশনটি সরাসরি স্কয়ার কোম্পানীর এসআর এর নিকট থেকে সংগ্রহ করা হয়। পরে আমরা কোম্পানীর সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, ইঞ্জেকশনটি স্কয়ারের নয়। এটি নকল করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে স্কয়ারের ঊর্ধতম কর্মকর্তা রেজাউল করিমের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পুশ করা ইঞ্জেকশনটি স্কয়ারের নয়। আমাদের কোম্পানীর নাম ব্যবহার করে ওষুধটি নকল করা হয়েছে। তিনি বলেন, নকল বন্ধে স্কয়ার প্রতিনিয়ত মোরক ও নকশা পরিবর্তন করি।
পাবনা ড্রাগ সুপার রোকনুজ্জামান জানান, ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ফার্মাসীর মালিককে জরিমানা করা হয়েছে। আমরা স্কয়ার কোম্পানীর এসআর হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছি কোম্পানীর নিকট। তা ছাড়াও কলেজ ছাত্রীর পরিবার চাইলে তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারে।
সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মবর্তা রিজু তামান্না জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর কাওসার ফার্মাসীতে অভিযান চালাই। ঘটনাস্থলেই ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৭০ হাজার টাকা ফার্মাসীর মালিকে জরিমানা করা হয়। যা ভ্রাম্যমান আদালতের আইনে সর্বোচ্চ জরিমানা।