১৫ই জুন, ২০২৫ 🔻 ১লা আষাঢ়, ১৪৩২🔻 ১৮ই জিলহজ, ১৪৪৬

সুজানগরে শিশু ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় অবশেষে মামলা

শেয়ার করুন:

 

 এম এ আলিম রিপন ঃ  সাত বছরের শিশু  ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় সুজানগর থানায় অবশেষে  মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে শিশুটির বাবা  বাদী হয়ে দানেজ শিকদার দানো (৪৮) কে অভিযুক্ত করে থানায় মামলাটি  দায়ের করেন। জানাযায়, উপজেলার হাটখালী ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনা  জানাজানি  হওয়ার পর  শিশুটির পরিবার ও অভিযুক্ত  ব্যক্তি সহ তার পক্ষের  লোকজনকে নিয়ে  সালিশ করে  গ্রামের  মাতব্বরেরা। সালিশে মাতবরদের  নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শাস্তি হিসেবে  কান ধরে  উঠবস করানো এবং জুতার মালা  গলায় দিয়ে স্থানীয় গ্রামে ঘোরানো হয়। ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবার ও কয়েক প্রতিবেশী জানায়, গত শনিবার বিকাল ৪টার দিকে  স্থানীয়  বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর  এক ছাত্রী  শ্রীপুর  বালিকা বিদ্যালয় হতে এক শিক্ষকের কাছ থেকে  প্রাইভেট পড়ে নিজ বাড়ী যাবার পথে  রাস্তার পাশের একটি দোকান থেকে বিস্কুট কিনতে গেলে দোকান মালিক দানেজ শিকদার দানো (৪৮)  শিশুটিকে একা পেয়ে দোকানের  পিছনেই  তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে  শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। দানো শিকদার  শ্রীপুর গ্রামের মৃত মঙ্গল  শিকদারের ছেলে। ঘটনার পরপরই শিশুটি কান্না করতে করতে বাড়ীতে গিয়ে তার মায়ের কাছে বিষয়টি জানালে জখম অবস্থায় শিশুটিকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দেন পরিবারের লোকজন। এরপর শিশুটির পরিবার  গ্রামের মাতবরদের বিষয়টি জানান।  স্থানীয় সূত্র জানায়, শিশুটির পরিবার দরিদ্র হওয়ায়  তাদের  আইনের আশ্রয় নিতে  নিরুৎসাহিত  করেন মাতবররা । গ্রামের সালিশের  মাধ্যমে  সালিশের পরামর্শ দেন  তারা। মেয়েটির পরিবার  এ মীমাংসায়  রাজি না থাকলেও  সালিশকারীদের  ভয়ে  থানায় মামলা করতে  পারেনি। ঘটনার  দুইদিন পর  গত সোমবার রাতে  শ্রীপুর  বালিকা বিদ্যালয়ে রাত আটটার সময় সালিশ বৈঠকে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কান ধরে উঠবস করানো, তার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে ঘোরানো এবং অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে  অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিজ বসতভিটা বিক্রি করে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য একটি নির্দ্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সালিশ বৈঠকের পরদিন গত মঙ্গলবার শিশু ধর্ষণ চেষ্টাকারী দানো শিকদারকে গলায় জুতার মালা দিয়ে ওই গ্রামে ঘোরানো হয়। এ নিয়ে গত বৃস্পতিবার একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর বিষয়টি  অবগত হয়ে পাবনা সহকারি পুলিশ সুপার(সুজানগর সার্কেল) রবিউল ইসলাম পুলিশের পক্ষ্য থেকে শিশুটির পরিবারকে  আইনগত সেবা প্রদানে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এবং এর পরপরই বৃহস্পতিবার রাতে  শিশুটির বাবা  মামলা দায়ের করেন।   সুজানগর থানার ওসি আব্দুল হাননান জানান, মামলার ভিত্তিতে  শিশু ধর্ষণচেষ্টাকারীকে গ্রেফতার করতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তিনি আরো বলেন ধর্ষণ চেষ্টার শাস্তি সালিশ  বৈঠক ডেকে দেয়ার বিধান নেই । কোন  নারী কিংবা  শিশুকে  ধর্ষণ  অথবা ধর্ষণ চেষ্টা ফৌজদারি অপরাধ।  ধর্ষণ কিংবা ধর্ষণ  চেষ্টার ঘটনা  একমাত্র  নারী ও শিশু  নির্যাতন  দমন ট্রাইব্যুনাল  আমলে নিয়ে  বিচার করতে পারবেন।  অন্য কোনভাবেই  বিচারের  সুযোগ নেই।