১০ই ডিসেম্বর, ২০২৫ 🔻 ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২🔻 ১৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭

আজ মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিনের ৭৬ তম জন্মদিন

শেয়ার করুন:

█ এবিএম ফজলুর রহমান, পাবনা
১৯৭ বছরের প্রচীন পদ্মা যমুনা বিধৌত অবহেলিত জনপদ পাবনার বাতিঘর মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিনের আজ ৭৬ তম জন্মদিন। আর্দশ, একাগ্রতা, সততা, নিষ্ঠা, শ্রম, বলিষ্ঠতা, মেধা ও শৃংখলা একজন মানুষকে যে কত উপরে নিয়ে যেতে পারেন তার উজ্জ্বলতম দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের ২২তম মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সত্তর দশকে তিনি গলি থেকে রাজপথে স্বাধীকারের জন্য আন্দোলন করেছেন। ছাত্র যুবদের অধিকার আদায়ে সব সময় ছিলেন সোচ্চার। সাংবাদিকতা, শিক্ষকতা, আইন পেশা, বিচারক, দুদকের কমিশনার হয়ে সর্বশেষে তিনি ২০২৩ সালের ২৩ এপ্রিল গণপ্রজাতন্ত্রি আংলাদেশর রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। তিনি ঐতিহ্যবাহী পাবনা প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য।
তিনি পাবনার উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেন। প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ইছামতি নদী খনন প্রকল্প, ৫‘শ শয্যার পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণ, পাবনা মানসিক হাসপাতালের উন্নয়নে মেগা প্রকল্প, পাবনা-আরিচা-খয়েরেরচর রাস্তা নির্মান করে ঢাকার সঙ্গে দুরত্ব কমিয়ে আনাসহ নানা প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেন।
মোঃ সাহাবুদ্দিন ১৯৪৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পাবনা শহরের শিবরামপুরস্থ জুবিলি ট্যাঙ্ক পাড়ায় জন্মগ্রহন করেন। তাঁর বাবার নাম শরফুদ্দিন আনসারী, মাতার নাম খায়রুন্নেসা। তিনি রাধানগর মজুমদার একাডেমি থেকে ১৯৬৬ সালে এসএসসি, পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে ১৯৬৮ সালে এইচএসসি এবং ১৯৭১ সালে (অনুষ্ঠিত ১৯৭২ সালে) বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৪ সালে তিনি মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে তিনি পাবনা শহীদ আমিনুদ্দিন আইন কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১০৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে একমাত্র তিনিই উচ্চতর দ্বিতীয় শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। ছাত্রজীবনে রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। মোঃ সাহাবুদ্দিন ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৭৮ সালে তিনি দৈনিক বাংলারবাণী পত্রিকার পাবনা জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন এবং পাবনা প্রেসক্লাবের সদস্য হন। তিনি ১৯৮০ সাল থেকে বিভিন্ন সময় রাজপথের একজন সক্রিয় নেতা ছিলেন। তিনি কিছুদিন শহীদ বুলবুল কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিচার) ক্যাডারে যোগ দেন। ১৯৯৫-১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্বাচিত হন। তিনি চাকুরিকালীন অতিরিক্ত জেলা জজ ও জেলা জজদের প্রশিক্ষণ কর্মশালার মূল্যায়নে উভয় ক্ষেত্রেই প্রথম স্থান অধিকার করেন। শ্রম আদালতের চেয়ারম্যান হিসাবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। মোঃ সাহাবুদ্দিন জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে ২০০৬ সালে অবসর গ্রহণ করেন এবং বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইন পেশায় প্রত্যাবর্তন করেন। মোঃ সাহাবুদ্দিন ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। সাহাবুদ্দিন পাবনা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২-১৯৭৪ পর্যন্ত তিনি পাবনা জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব ও ১৯৭৩-১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা পরিবার পরিকল্পনা সমিতির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি পাবনা প্রেস ক্লাব, অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরি ও বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্রের জীবন সদস্য। জনাব মোঃ সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা সরকারের যুগ্ম সচিব হিসাবে ২০০৯ সালে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি বর্তমানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও পরিচালক হিসাবে কর্মরত। মো. আরশাদ আদনান তাঁদের একমাত্র সন্তান। তাঁর দুই জমজ নাতি তাহসিন মো. আদনান ও তাহমিদ মো. আদনান ও-লেভেলে পড়াশোনা করছে। ভ্রমণ করা, বই পড়া ও গান শোনা তাঁর প্রিয় শখ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দক্ষতার সঙ্গে সকল পরিস্থিতি মোকাবেলা করেন।
২০২৩ সালের ১৩ ফেব্রæয়ারি তিনি দেশের ২২ তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিন হন এবং ২৪ এপ্রিল শপথ নেন। তার ৭৬ তম জন্মদিনে পাবনার বিভিন্ন সংগঠন মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

লেখক : এবিএম ফজলুর রহমান, সাবেক সভাপতি, পাবনা প্রেসক্লাব।