৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ 🔻 ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২🔻 ১৫ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭

ইসরায়েলের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান মিসর ও কাতারসহ ৮ মুসলিম দেশের

শেয়ার করুন:

ইসরায়েলের পরিকল্পনা কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে মিসর ও কাতারসহ আটটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। গাজা সংকটের মধ্যেই রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং শুধু ফিলিস্তিনিদের গাজা ছাড়ার সুযোগ দিতে একমুখীভাবে খোলার পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন তারা। তাদের মতে, এই পদক্ষেপ মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেবে এবং ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার আশঙ্কা তৈরি করবে।

শনিবার (০৬ ডিসেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে মিসর, ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাত গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সিওজিএটির মাধ্যমে যে ঘোষণা দিয়েছে তা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতাকারী শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপেরই লঙ্ঘন। দেশটি রাফাহ কেবল গাজাবাসীর বের হওয়ার জন্য খোলা হবে বলে জানিয়েছে।

দেশগুলো জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করার যে কোনো প্রচেষ্টা তারা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা রাফাহ ক্রসিং দ্বিমুখীভাবে খোলার দাবি জানিয়েছে। বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়। এ প্রস্তাবে রাফাহ উভয় দিক দিয়ে খোলা এবং গাজায় একটি প্রযুক্তিবিদনির্ভর ফিলিস্তিনি সরকার গঠনের কথা বলা হয়েছে।

আলজাজিরা জানিয়েছে, যদিও অক্টোবর ১০ থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে তবে বিভিন্ন সূত্রে বলা হচ্ছে, গত সাত সপ্তাহে ইসরায়েল অন্তত ৬০০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। শনিবার ভোরে বেইত লাহিয়ায় ড্রোন হামলায় দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতরা পরিবারের সদস্যদের সাথে তাদের খামার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।

গাজা সিটির পূর্বাঞ্চল, মাঘাজি শরণার্থী শিবির এবং রাফাহসহ বিভিন্ন স্থানে অন্তত ২০টি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। খান ইউনুস ও রাফাহর পূর্বাঞ্চলে ট্যাংক ও আর্টিলারি হামলার খবরও পাওয়া গেছে। সমুদ্র উপকূলে ফিলিস্তিনি জেলেদের নৌকাতেও ইসরায়েলি নৌবাহিনী হামলা চালিয়েছে।

বর্তমানে ইসরায়েল গাজার দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের একটি বড় অংশসহ মোট এলাকায় প্রায় অর্ধেকেরও বেশি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।

দোহা ফোরামে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল থানি বলেন, যুদ্ধবিরতি এখনো পূর্ণাঙ্গ নয়। যুদ্ধবিরতি তখনই সম্পন্ন হবে যখন ইসরায়েলি সেনারা সম্পূর্ণভাবে গাজা থেকে প্রত্যাহার করবে এবং স্থিতিশীলতা ফিরবে।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, গাজায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) পাঠানোর বিষয়ে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে এবং এর প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের সীমান্তে আলাদা রাখা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাফাহ ক্রসিং যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকায় গাজায় মানবিক অবস্থা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। চিকিৎসা ও খাদ্যসহ জরুরি সহায়তা প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। গত অক্টোবর ২০২৩ থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৭০ হাজার ১২৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ সময়ে আহত হয়েছেন আরও অন্তত এক লাখ ৭১ হাজারের বেশি মানুষ।