৮ই নভেম্বর, ২০২৫ 🔻 ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২🔻 ১৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭

ইসরায়েলের স্পর্শকাতর ভিডিও ফাঁস, মধ্যপ্রাচ্যে তোলপাড়

শেয়ার করুন:

একটি স্পর্শকাতর ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়। আর এমন ঘটনায় নড়েচড়ে ওঠে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ভারসাম্য। কেউ এমন ঘটনায় আতঙ্কিত হয়েছেন, দুঃখ প্রকাশ করেছেন, আবার কেউ পাল্টা গর্জনও দিয়েছেন। কিন্তু কেউই ভিডিওর সেই মানুষটির সঙ্গে হওয়া অবিচার নিয়ে যেন কোনো কথা বলতেই ভুলে গেছে। এক নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি বন্দিকে নির্মমভাবে নির্যাতন করার বিচার চাওয়ার বদলে সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কে এবং কেন ভিডিওটি ফাঁস করছে তা নিয়ে।

জানা যায়, ইসরায়েলের সামরিক আটক কেন্দ্র স্দে তেইমানে ২০২৪ সালের ৫ জুলাই এ নারকীয় অপরাধ সংঘটিত হয়। সম্প্রতি সেই ভয়াবহ ঘটনার ফুটেজ ফাঁস করেন দেশটির শীর্ষ সামরিক আইনজীবী মেজর জেনারেল ইয়িফাত টোমের-ইয়েরুশালমি। ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ইসরায়েলি সেনা মিলে একজন ফিলিস্তিনি বন্দিকে নির্মমভাবে ধর্ষণ করছে। পরে ছিন্নভিন্ন অন্ত্র, ফুসফুসে আঘাত ও একাধিক পাঁজরের হাড় ভাঙার কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

কিন্তু, ঘটনার ভয়াবহতা নিয়ে আলোচনার বদলে এখন সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ভিডিওটি ফাঁস করে দেওয়া টোমের-ইয়েরুশালমিকে নিয়ে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই ভিডিও ফাঁসের ঘটনাকে বলেছেন, ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ জনসংযোগ আক্রমণ। তার সমর্থকরা টোমেরকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করছে, তাকে দেশদ্রোহী বলছে। অন্যদিকে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ভিডিও ফাঁসের ঘটনাকে বলছেন অপবাদ।

এদিকে, ভিডিও ফাঁস করার পর টোমের-ইয়েরুশালমি নিজেই গত ১ নভেম্বর পদত্যাগ করেন। এ সময় ইয়েরুশালমি স্বীকার করেন যে, ভিডিওটি তিনিই ফাঁস করেছিলেন। আর এর কয়েক ঘণ্টা পরে তিনি নিখোঁজ হন। পরে সন্দেহভাজন একটি আত্মহত্যার নোটের সূত্র ধরে পুলিশ তাকে খুঁজে বের করে। কিন্তু মজার বিষয় হলো ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করেছে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ, বিচারপ্রক্রিয়ায় বাধা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগে।

তবে, যে ঘটনার কারণে এসব কিছু করা হয়েছে, সেই ধর্ষণের তদন্তই এখন আড়ালে চলে গেছে। অভিযুক্ত ৫ সেনার বিরুদ্ধে নৃশংস নির্যাতনের পর ধর্ষণের অভিযোগ এখন অনেকটাই হালকা করে দেখা হচ্ছে। এ সময় দেখা গেছে তারা নিজেদের মুখ ঢেকে আদালতে হাজির হন এবং নিজেদের দেশপ্রেমিক সেনা হিসেবে দাবি করেন। ধর্ষণের ঘটনাটিকে তারা দেশ রক্ষার কাজ হিসেবে বর্ণনা করে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

এদিকে এই ঘটনার পর সাংবাদিক অরলি নয় মন্তব্য করেন, এখানে কেউ ধর্ষণের অপরাধের কথা বলছে না। এখন যেন আলোচনার মূল বিষয় হয়ে গেছে কে ভিডিওটি ফাঁস করেছে, কেন করেছে, আর তথাকথিত ডিপ স্টেট ষড়যন্ত্র তো আছেই। রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, ক্ষমতার লড়াই, আর বিচার বিভাগের সঙ্গে নেতানিয়াহুর পুরনো সংঘাত— সব মিলিয়ে এখন এই ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে।

বিস্তারিত দেখুন ভিডিওতে…