২৮শে অক্টোবর, ২০২৫ 🔻 ১২ই কার্তিক, ১৪৩২🔻 ৫ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭

ইসির রিমোট কন্ট্রোল আগারগাঁওয়ে নেই : হাসনাত

ইসির রিমোট কন্ট্রোল আগারগাঁওয়ে নেই : হাসনাত

শেয়ার করুন:

ইসির রিমোট কন্ট্রোল আগারগাঁওয়ে নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পাটির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) ইসি সচিবালয়ে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, নির্বাচন কমিশনের অ্যাক্টিভিটিতে মনে হয় একটা ইনস্টিটিউশনাল, একটা অটোক্রেসি (স্বৈরশাসন) তৈরি হচ্ছে। প্রথমত হচ্ছে, যেই মার্কাগুলো অলরেডি নির্বাচন কমিশনের শিডিউলের মধ্যে রয়েছে, এগুলো কোন নীতিমালার ভিত্তিতে শিডিউলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেটার কোনো স্পষ্ট নীতিমালা নেই। এক নম্বর বিষয়। দুই নম্বর বিষয় হচ্ছে, শাপলাকে কেন ওই শিডিউলে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না, সেটারও স্পষ্ট নীতিমালা নেই। তিন নম্বর, বাংলাদেশে বিদ্যমান ক্রিয়াশীল যে রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে, তাদের যেই মার্কাগুলো দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সময়, কোন নীতিমালার ভিত্তিতে সেই মার্কাগুলো দেওয়া হয়েছে, সেটারও কিন্তু কোনো স্পষ্ট নীতিমালা নেই।

তিনি বলেন, মধ্যযুগীয় বর্বর শাসনব্যবস্থায় আমরা দেখতাম, যেখানে রাজা যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই আইন প্রণয়ন করে। নির্বাচন কমিশনের আচার-আচরণে আমরা এ ধরনের—আমি বলছি না যে তারা এটা করছে বা তাদের ইচ্ছা আছে, বাট আমরা দেখছি মধ্যযুগীয় রাজাবাদশাদের আচরণের সঙ্গে তাদের একটা সাদৃশ্য রয়েছে।

এনসিপির এ নেতা বলেন, আমাদের মার্কার ক্ষেত্রে আমাদের সাংস্কৃতিক, আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সেই গ্রহণযোগ্যতা—সেটি যেন কখনোই গণবিদ্বেষী, জনগণ-বিদ্বেষী না হয়, সে বিষয়টি আমলে নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমরা দেখেছি যে, নির্বাচন কমিশন একটি স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্তগুলো আমাদের কাছে মনে হচ্ছে বা আমাদের তাদের সঙ্গে যেই আলোচনা বা তাদের সঙ্গে এই যে আমরা কাজ করছি, আমাদের কাছে মনে হয়েছে যে, এই সিদ্ধান্তগুলো আসলে চাপিয়ে দেওয়া। আমরা বারবার বলেছি, এটা নতুন কোনো কথা নয়। আমি গতকালও বলেছি যে, নির্বাচন কমিশনের আসলে রিমোট কন্ট্রোলটা অন্য জায়গায়। নির্বাচন কমিশনের রিমোট কন্ট্রোল আগারগাঁওয়ে নেই। এটা অন্য কোনো জায়গা থেকে পরিচালিত হয়। আমরা যখনই তাদের সঙ্গে কথা বলি, মনে হয় এই ডিসিশনটা তারা নিজেরা নেয় না, এই ডিসিশনটা তাদের চাপিয়ে দেওয়া হয় এবং তাদের আসলে এই ডিসিশনটা নিতে বাধ্য করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচন হওয়ার কথা আছে, নির্বাচন কমিশনের বর্তমান কার্যক্রম পর্যালোচনা সাপেক্ষে আমরা এটা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই নির্বাচন কমিশন একটি অংশগ্রহণমূলক, একটি নিরপেক্ষ, একটি স্বচ্ছ, প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন করার কোনো ধরনের কোনো যোগ্যতা নেই। এই নির্বাচন কমিশন একটা স্পাইনলেস (মেরুদণ্ডহীন) নির্বাচন কমিশন। এখানে নির্বাচন কমিশনের গঠন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে, আপনি যদি দেখেন নির্বাচনের যে গঠন প্রক্রিয়া, এটার একটা সুস্পষ্ট নীতিমালা ছিল না। এখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের, বিভিন্ন পক্ষের ইনভলভমেন্ট রয়েছে। সেজন্য এই নির্বাচন কমিশন, একটা নির্বাচন কমিশন হিসেবে ফাংশন করছে না। বরং যারা নিয়োগ দিয়েছে, যেই রাজনৈতিক দল বা যেই প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছে, তাদের পারপাসটা হচ্ছে এই নির্বাচন কমিশনের ব্যানারে তারা সার্ভ করছে। অর্থাৎ তারা হচ্ছে ওই প্রতিষ্ঠানের, যারা নিয়োগ দিয়েছে, ওই প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে।

হাসনাত বলেন, সেই জায়গা থেকে আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলব, নির্বাচন কমিশন যেন এমন কোনো স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত না নেয়, যাতে করে নুরুল হুদা কমিশনের মতো বা নুরুল হুদার মতো পরিণতি হয়। কারণ এই দেশের মানুষ, এই দেশের মানুষ যখন জনবিদ্বেষ তৈরি হয়, তখন কিন্তু তাদের আসলে দমিয়ে রাখা যায় না। হয়তো দুই মাস, হয়তো দুই বছর, হয়তো দশ বছর। কিন্তু এটার যেই জনবিস্ফোরণ ঘটবে, সেটা যেন নুরুল হুদার মতো পরিস্থিতি না হয়, সেটাই আসলে আমরা আমাদের জায়গা থেকে চাই।



সুত্রঃ কালবেলা