প্রিয় পাবনাবাসী, এখনও আমরা ভাল আছি। নিজে সচেতন হোন সকলকে সচেতন করুন। মাস্ক ব্যবহার করুন। একজন ডাক্তারের লেখা নিচের কাহিনী পড়লে বুঝবেন করোনা কতটা ভয়াবহ আকার ধারন করেছে।
ওয়ার্ডে পা দিয়েই ১টি ডেড বডি, তিনটার মধ্যে ২২টি পেশেন্ট!!
গত ২৪ মার্চের নাইট ডিউটি ছিল মুগদা হাসপাতালের আমার কোভিড ডিউটির ভয়ংকরতম রাত। ফজর পর্যন্ত আমি এবং আমার তিন কলিগ সাত তলা থেকে ১২ তলা পর্যন্ত অবিরাম ছুটে বেড়িয়েছি। ওয়ার্ডে পা দিয়েই একটা ডেড বডি। অবিরাম রোগী আসছে শ্বাসকষ্ট নিয়ে। বেশিরভাগ রোগীর ফুসফুস ৩০-৬০% আক্রান্ত। অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৭০ থেকে ৮০ পার্সেন্ট। আইসিইউ তে অবিরাম কল যাচ্ছে কিন্তু ১৪ বেডের ICU খালি হচ্ছে না। পঁচিশটা আইসিইউ কল পেন্ডিং। রোগীর এটেনডেন্ট এ অসহায় আর্তনাদে রাতের বাতাস ভারী। তাদের কাকুতি মিনতি যত টাকা লাগে ডক্টর একটা আইসিইউ দিন। তাদের কাছে উল্টো ক্ষমা চাই; বোঝাতে পারি না ওয়ার্ডে পনের লিটারের বেশি অক্সিজেন দেওয়া যায় না যেখানে পেশেন্টের দরকার ৬০-৭০ লিটার পার মিনিট অক্সিজেন। আমাদের অক্ষমতা আমাদের অশ্রু কেউ দেখে না। চোখের সামনে স্যাচুরেশন পঞ্চাশে নেমে আসে, এতটা অসহায় আর কখনো লাগেনি নিজেকে। এমনকি ২০১৯ এ ডেঙ্গু মহামারীতে একা ২০০ পেশেন্ট ম্যানেজ করার সময়ও না!!
রাত তিনটার মধ্যে বাইশটা পেশেন্ট ভর্তি!! অষ্টম নবম তলা থেকে খবর আসে আমরা ফুললি অকুপাইড, কোন বেড খালি নেই। ভোরের দিকে আবার মৃত্যু। ইমার্জেন্সির সামনে অ্যাম্বুলেন্সের ভিড়। সীমিত জনবল আর লজিস্টিকস নিয়ে আমরা এই করোনা ঝড়ের সামনে দাড়িয়ে আছি! অসম এই লড়াইয়ে আমরা হারতে চাই না। তাই দুইবার করোণা আক্রান্ত হয়েও ডিউটিতে ফিরেছি। অনেক সহকর্মী হারিয়েছে তার আপনজন। ১১ মাসের টানা লড়াইয়ে আমরা বিপর্যস্ত। তাই ডাক্তারকে গালি দেয়া বন্ধ করে নিজেরা একটু দায়িত্বশীল হন। আইসিউ বেড বা অক্সিজেন আমরা তৈরি করি না। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন, অকারণে ঘরের বাইরে যাবেন না!
Help us to fight the pandemic!!
ডা. সাইয়েদা নাজিয়া।
জেলা পুলিশের ফেসবুক থেকে নেওয়াঃ







