দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন এবং কারাভোগের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (১২ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে একটি হৃদয়স্পর্শী পোস্ট দিয়েছেন।
পোস্টে বিএনপির মহাসচিব লেখেন, আমার মেয়ে যখন আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল, ঢাকা জেলে, এই ব্যাগটা আমি ওকে দিয়েছিলাম। ব্যাগটা জেলের ভেতরে এক বন্দি বানিয়েছিল। তার কাছ থেকে কিনেছিলাম। জানি না, কাউকে কল্পনায় রেখে সে বানিয়েছিল কি না এই ব্যাগটা। প্রশ্ন করা হয়নি ছেলেটাকে।
তিনি লেখেন, গত পনেরো বছরে বাংলাদেশের জেলে লাখ লাখ কর্মী বন্দি ছিল, মিথ্যা মামলায়। আমার নিজের জেলার হাজার ছেলের পুরো জীবন শেষ হয়ে গেছে।
তিনি আরও লেখেন, আমি নিজে আমার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের করা ১১০-এর বেশি মামলার আসামি ছিলাম। ময়লার গাড়ি পোড়ানো থেকে শুরু করে হত্যা মামলা। সব মিথ্যা মামলা। আড়াই বছরের বেশি জেলে ছিলাম। কোর্টে কোর্টে আমার অসুস্থ স্ত্রী দৌড়ে গেছে। আসিফ নজরুল একবার পত্রিকায় লিখেছিলেন একটি কলাম ‘রাষ্ট্র বনাম মির্জা ফখরুল’। জেলে মাটিতেও শুতে হয়েছিল। আমাদের বলা হয়েছে, নির্বাচনে আসুন, মুক্তি পাবেন। আমরা প্রহসনের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করিনি। ৭ বার জামিন রিজেক্টেড হয়েছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লেখেন, আমি জেলে দেখেছি আমাদের ছেলেদের ওপর কি অত্যাচার হয়েছে। সারা শরীর জুড়ে অত্যাচারের দাগ। এদের অনেকের সারা জীবন, ভবিষ্যৎ শেষ হয়ে গেছে জেলে। পড়াশোনা হয়নি, সংসার হয়নি। এদের পরিবার সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে। যারা মাঠের রাজনীতি করে না, তারা কোনো দিন জানবে না এদের স্ট্রাগল। কথা নিয়ে অনেক রাজনীতি করা যায়, ফ্যাসিজমের সামনে দাঁড়িয়ে জেলে যেতে পারে না সবাই।
মির্জা ফখরুল লেখেন, প্রতিটি রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের করা প্রতিটি মিথ্যা এবং হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। হাসিনার এবং তার মাফিয়া বাহিনীর প্রতিটি অপরাধের বিচার করতে হবে। আমরা প্রতিশোধে বিশ্বাসী নই। আমরা প্রকৃত অন্যায়কারীর বিরুদ্ধেই মামলা করবো এবং শাস্তি নিশ্চিত করব। যে যেই অন্যায় করেনি, তাকে সেই অন্যায়ের জন্য হয়রানি কেন করা হবে? কোনো নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করার নাম রাজনীতি না। আমরা ইনসাফের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।
পরিশেষে তিনি আশা প্রকাশ করে লেখেন, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
সুত্রঃ কালবেলা







