১লা নভেম্বর, ২০২৫ 🔻 ১৬ই কার্তিক, ১৪৩২🔻 ৯ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭

গণভোট নিয়ে হ্যাঁ-না পোস্টের প্রতিযোগিতা ফেসবুক-ইনস্টায়

গণভোট নিয়ে হ্যাঁ-না পোস্টের প্রতিযোগিতা ফেসবুক-ইনস্টায়

শেয়ার করুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট ইস্যুতে কয়েকদিন ধরে দেশের জাতীয় রাজনীতিতে চলছে নানা আলোচনা। দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ কয়েকটি দল জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোটের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দল জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোটের দাবিতে অনড়। এমন পরিস্থিতিতে গণভোট ইস্যুতে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে চলছে ‘হ্যাঁ-না’ পোস্টের প্রতিযোগিতা। বুধবার মধ্যরাত থেকে ‘হ্যাঁ’ ও ‘না’ লেখা পোস্টে ভরে গেছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের নিউজফিড। যারা জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট চান তারা ‘হ্যাঁ’ লেখা পোস্টার শেয়ার করছেন। আর যারা জাতীয় নির্বাচনের দিন বা তার পরে গণভোট চান তারা ‘না’ লেখা পোস্টার শেয়ার করছেন। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ নেটিজেনদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পক্ষ থেকে প্রথমে ‘না’ ক্যাম্পেইন শুরু হয়। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে পাল্টা ‘হ্যাঁ’ ক্যাম্পেইন শুরু হয়। মুহূর্তে এই

‘হ্যাঁ-না’ ক্যাম্পেইন ভাইরাল হয়ে যায়। বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্রদলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে ‘না’ লেখা ফটোকার্ড শেয়ার করা হয়। একই ফটোকার্ড পোস্ট করেন ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরও।

পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ‘হ্যাঁ’ লিখে পোস্ট করা হয়। এরপর ভোরের দিকে ছাত্রদলের ভেরিফায়েড পেজে আরেকটি ফটোকার্ড শেয়ার করা হয়, সেখানে চারটি পয়েন্টে লেখা রয়েছে, ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ সংবিধান থেকে বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্রকে—‘না’; স্বাক্ষরের পর জুলাই সনদ পরিবর্তনের ষড়যন্ত্রকে—‘না’; জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটকে—‘না’ এবং শত শহীদের রক্তে কেনা জুলাই কারও বাপের ‘না’।

সামাজিক মাধ্যমে এ ধরনের সংক্ষিপ্ত শব্দভিত্তিক প্রচারণা আসন্ন নির্বাচন ও গণভোট ইস্যু ঘিরে জনমত গঠনের নতুন কৌশল হিসেবেই দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়নে অবিলম্বে সরকারি আদেশ জারি করে একটি গণভোট আয়োজনের সুপারিশ করেছে। গণভোটের ব্যালটে দেওয়ার জন্য কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং ইহার তপশিল-১-এ সন্নিবেশিত সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবসগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করিতেছেন? হ্যাঁ কিংবা না-এর মাধ্যমে জনগণ এ বিষয়ে তাদের সম্মতি জানাবেন। কমিশন তাদের সুপারিশে বলেছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ একই সঙ্গে সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও জাতীয় সংসদ হিসেবে কার্যকর থাকবে। তবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ কার্যকর থাকবে ২৭০ দিন। এ বিষয়ে বিকল্প প্রস্তাবে কমিশন বলেছে, যদি সংবিধান সংস্কার পরিষদ ২৭০ দিনের মধ্যে তাদের দায়িত্ব সম্পাদন করতে না পারে, তাহলে গণভোটে পাস হওয়া বিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে প্রতিস্থাপিত হবে।

এদিকে গণভোট নিয়ে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করেছে জানিয়ে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, এসব বিষয়ে শিগগির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা।



সুত্রঃ কালবেলা