৮ই নভেম্বর, ২০২৫ 🔻 ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২🔻 ১৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭

পাবনায় অনলাইন জুয়ায় হেরে স্ত্রীকে চিঠি লিখে যুবকের আত্মহত্যা

শেয়ার করুন:

অনলাইন জুয়ায় হেরে স্ত্রীকে চিঠি লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মো. সেলিম নামে এক যুবক। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাকশি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মনিরুল ইসলাম। 

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাতে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী যুক্তিতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত সেলিম নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার থানাইখাড়া গ্রামের বাবু হোসেনের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ছয় মাস ধরে স্ত্রী খাদিজা ও তিন বছর বয়সী মেয়ে সাবিহাকে নিয়ে পাকশী যুক্তিতলা এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন সেলিম। তার স্ত্রী খাদিজা ঈশ্বরদী ইপিজেডের আইএম বিডি নামের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় কাজ শেষে বাসায় ফিরে খাদিজা দেখেন, সেলিম গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলছেন। পরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। এ সময় ঘর থেকে একটি চিঠি উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, মৃত্যুর আগে সেলিম চিঠিটি লিখে গেছেন।

চিঠিতে তিনি লিখেছেন— “প্রিয় খাদিজা, তোমার কথা রাখতে পারলাম না। আমি খুব বড় অপরাধ করে ফেলেছি, পারলে আমায় মাফ করে দিও। আমি আর পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে চাই না। আব্বার সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলেছি, তারা ভালো আছে। তুমি আর আমার মেয়ে ভালো থেকো। সাবিহাকে দেখে শুনে মানুষ কইরো। ইতি-তোমার সেলিম। শেষবারের মতো তোমার চেহারাটা দেখতে পারলাম না। I love you খাদিজা, সাবিহা। আব্বা-আম্মা, তোমরাও আমাকে ক্ষমা করে দিও। খাদিজার কোনো দোষ নেই। আমার ভুলেই আমি চলে যাচ্ছি।”

জানা গেছে, সেলিম দীর্ঘদিন বেকার ছিলেন এবং অনলাইন জুয়ায় আসক্তসহ বার বার হেরে ব্যাপক হতাশ হয়ে পড়েন। এতে পরিবারের অনেক টাকা নষ্ট হয়। পরপর ক্ষতি ও বেকারত্বের হতাশা থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। স্থানীয়দের ধারণা, জুয়ার আসক্তি ও আর্থিক দুরবস্থার কারণে হতাশ হয়ে আত্মহত্যা করেছেন সেলিম।

পাকশী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।