২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে পাবনা জেলায় দেখা দিয়েছে আশঙ্কাজনক অবনতি। গত বছরের তুলনায় পাসের হার কমেছে প্রায় ১৬ শতাংশ, পাশাপাশি ফেল করেছে দ্বিগুণেরও বেশি শিক্ষার্থী। কমেছে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাও।
বিষয় | ২০২৫ | ২০২৪ |
---|---|---|
মোট পরীক্ষার্থী | ৩৬,১৮৩ | ৩৮,২২৫ |
মোট উত্তীর্ণ | ২৫,৫৭৮ | ৩৩,০৫৫ |
ফেল করেছে | ১০,৬০৫ | ৫,১৭০ |
জিপিএ-৫ | ২,৯৩৫ | ৩,৬৩৯ |
পাসের হার | ৭০.৬৯% | ৮৬.৪৭% |
ফেল হার | ২৯.৩১% | ১৩.৫৩% |
জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হার | ৮.১১% | ৯.৫২% |
পাসের হার কমেছে ১৫.৭৮%:
২০২৪ সালে পাবনা জেলায় পাসের হার ছিল ৮৬.৪৭%। সেখানে এবছর তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৭০.৬৯ শতাংশে। এক বছরের ব্যবধানে পাসের হার কমেছে ১৫.৭৮ শতাংশ পয়েন্ট, যা জেলার শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি বড় সতর্ক সংকেত।
দ্বিগুণের বেশি ফেল:
গত বছর ফেল করেছিল ৫,১৭০ শিক্ষার্থী, যেখানে ২০২৫ সালে ফেল করেছে ১০,৬০৫ জন— বৃদ্ধি প্রায় ১০৩%। এ হার শুধু শিক্ষার্থীর নয়, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
জিপিএ-৫-এ ধস:
২০২৫ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২,৯৩৫ জন শিক্ষার্থী, যেখানে ২০২৪ সালে ছিল ৩,৬৩৯ জন। কমেছে ৭০৪ জন, অর্থাৎ প্রায় ২০% কম শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ফলাফলে এই অবনতির পেছনে রয়েছে নতুন কারিকুলামের অস্পষ্টতা, শিক্ষক প্রশিক্ষণের ঘাটতি, পর্যাপ্ত প্রস্তুতির অভাব এবং অভিভাবকদের উদাসীনতা। এছাড়া অনিয়মিত ক্লাস, পাঠদান ব্যবস্থায় দুর্বলতা এবং মূল্যায়নে অসঙ্গতিও গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।
শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাবনা জেলার এই পতন ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ প্রয়োজন। স্কুল পর্যায়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণ জোরদার, সময়মতো পাঠদান ও শিক্ষার্থীদের নিয়মিত মূল্যায়নের ব্যবস্থা না নিলে আগামী বছরগুলোতে আরও খারাপ ফলাফল দেখা যেতে পারে।
তাদের মতে, এখন থেকেই স্কুলভিত্তিক তদারকি, প্রশাসনিক নজরদারি এবং অভিভাবকদের সম্পৃক্ত করে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। তা না হলে পাবনার শিক্ষা ব্যবস্থায় দীর্ঘমেয়াদি সংকট তৈরি হতে পারে।