সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বছরের অক্টোবর সাসের কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে পূর্ব শত্রæতা ও আঞ্চলিক আধিপত্ত বিস্তারকে কেন্দ্র করে আ.লীগ কর্মী কৃষক মকবুল হোসেনকে হত্যা কররে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। মকবুল পাবনার যাত্রাপুর গ্রামের মৃত রইচ উদ্দিনের মাষ্টারের ছেলে। চানদাই যাত্রাপুর নামক স্থানে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। এই ঘটনার পরের দিন (১৮ অক্টোবর, ২০২০ সালে) নিহতের স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিন নিজে বাদী হয়ে আটঘোরিয়া থানাতে ছয় জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। কিন্তু ঘটনার দীর্ঘ দুইমাস অতিবাহিত হলেও এখনো কোন আসামীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারেনি পুলিশ। মামলার পরে আসাসীরা প্রথম পর্যায়ে আত্মগোপন করলেও এখন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে জানা গেছে। এমনকি নিহতের পরিবার ও বাদীসহ মামলার প্রত্যক্ষদর্শীকে নানা ভাবে মামলা তুলে নেয়াসহ প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিহত মকবুলের স্ত্রী কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার স্বামী নিহত মকবুল হোসেন বিভিন্ন সময় পুলিশের সোর্স হিসাবে কাজ করতো। তিনি একজন আ.লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এলাকার সন্ত্রাসীদের বিল দখল, খাল দখলসহ নানা অপকর্মের প্রতিবাদ ও পুলিশের কাছে তাদের অপকর্মের তথ্য বলে দেয়ার কারনে তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পূর্বে এই সন্ত্রাসীরা বেশ কয়েকবার আমার স্বামীকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছিলো। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের মহা-পরিদর্শক ও জেলা পুলিশের সকল দপ্তরে কাছে বিষয়টি অবহিত করলেও কোন লাভ হয়নি তাতে। সবশেষে সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে প্রাণদিতে হলো আমার স্বামীকে। এখন সন্ত্রাসীদের ভয়ে এলাকায় থাকতে পারছেনা এই অসহায় পরিবার।
তিনি আরো বলেন, এলাকার সন্ত্রাসী জিয়ার ওরফে ছোট জিয়ার নেতৃত্বে জালালপুরের বাবলু, মনিপুর গ্রামের গ্রামের ইকবাল, যাত্রাপুরের হাসান একই গ্রামের রুহুল, রুবেল, নান্নু, মাবুল, গোলাম হোসেনসহ আরো বেশ কিছু যুবক মিলে নতুন ভাবে একটি সন্ত্রাসী দল গঠন করেছে। যাদের অত্যাচারে এলাকার সাধারন মানুষ অতিষ্ট হয়ে পরেছে। এরাই আমার স্মামীকে হত্যা করেছে। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী তাদের অপকর্মের কথা মুখে বলতে সাহস করেনা। আমরা জানতে পেরেছি বর্তমানে এই হত্যা মালাটি পুলিশের কাছ থেকে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্থান্তরিত করা হয়েছে। তাই অতিদ্রæত এই সকল সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসাসহ হত্যাকারীদের সর্বচ্চ শাস্তির দাবি করেন পরিবারের সদস্যরা।
মামলার বিষয়ে আটঘরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম জানান, মামলা নথিভূক্ত হওয়ার ৭দিন পরে মামলার তদন্ত ভার গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইডি)কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মামলায় অভিযুক্তদের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তবে এখন কি অবস্থায় রয়েছে সিআইডি বলতে পারবে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আল আলম বলেন, পূর্বশত্রæতা ও আঞ্চলিক আধিপত্ত বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যা সংঘটিত হয়েছে। এই হত্যা মামলার ঘটনার পরে তদন্তের কাজে আমি নিজেই সেখানে গিয়ে ছিলাম। হত্যা মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য বর্তমানে পাবনা (সিঅইডির)কাছে মামলা হস্থান্তর করা হয়েছে। অসামীদের গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে। নিহত পরিবারের সদ্যরা আমাদের কাছে এসেছিলো। হত্যাকারীরা প্রত্যক্ষদর্শীসহ পরিবারকে হত্যা হুমকি দিচ্ছে বলে তারা মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। স্থানীয় পুলিশকে বিষটি গুরত্বের সাথে দেখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রæত এই হত্যা মামলার সাথে জড়িত সকল হত্যাকারী ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।







