১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ 🔻 ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২🔻 ২১শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭

ভাঙ্গুড়ায় নৈশ প্রহরীকে বেঁধে রেখে ৪ স্বর্ণের দোকানের দুর্ধর্ষ ডাকাতি

শেয়ার করুন:

ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধিঃ পাবনার ভাঙ্গুড়ায় নৈশ প্রহরীকে বেঁধে রেখে চার জুয়েলারি (স্বর্ণের) দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ১০/১২ জনের সংঘবদ্ধ ডাকাতরা সোনা ও নগদ টাকাসহ কোটি টাকা ডাকাতি করে নিয়ে চলে গেছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) গভীর রাতে অষ্টমনিষা ইউনিয়নের অষ্টমনিষা বাজারের চারটি জুয়েলারি দোকানে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন, সহকারি পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) মোঃ আবু বক্কার ও ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অষ্টমনিষা বাজারের পূর্ব দিকে আঁখি জুয়েলার্স, মা জুয়েলার্স, মধু জুয়েলার্স ও উত্তম জুয়েলার্স পাশাপাশি কয়েকটি স্বর্ণের দোকান। প্রতিদিনের মতো ব্যবসায়ীরা দোকানের কাজকর্ম সেরে দোকান তালাবদ্ধ রেখে চলে যায়। বাজারে তিনজন নৈশ প্রহরী রয়েছে। গত বুধবার দিবাগত গভীর রাতে ১০/১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল অষ্টমনিষা বাজারে প্রবেশ করেই নৈশ প্রহরীদের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে।

এরপর আখি জুয়েলার্স, মা জুয়েলার্স ও মধু জুয়েলার্স পাশাপাশি থাকায় দোকানগুলিতে তালা কেটে প্রবেশ করে সোনা ও নগদ টাকা লুট করতে থাকে। এরপর পাশের উত্তম জুয়েলার্সের তালা কেটে ভিতরে প্রবেশ করে। সেখানে বাহিরে থাকা সোনা ও রুপা ও নগদ টাকা বাহিরে যেগুলো ছিল সেগুলো তারা নিয়ে নেয়। এরপর দোকানের সিন্দুক ভাঙতে না পেরে দোকানের উপর তলাতে মালিক বসবাস করে রঞ্জন কর্মকারকে ধরে শারীরিক নির্যাতন করে সিন্দুকের চাবি নিয়ে নেয়। চাবি নিয়ে সিন্দুকে রাখা ১২ ভরি সোনা ১৫ লক্ষ টাকা উপায় ১০০ ভরি রুপা তারা লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় তাদেরকে দেশীয় দিয়ে ভয়ে দেখিয়ে কাউকে কিছু বলতে দেননি।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান আখি জুয়েলার্স এর পনের ভরি সোনা, ১৭০ ভরি রুপা ও নগদ ১৫ লাখ টাকা, মা জুয়েলার্স ১৪ ভরি সোনা ৩০০ ভরি ও চল্লিশ হাজার টাকা, মধু জুয়েলার্সে পাঁচ ভরি সোনা ৩ লাখ নগদ টাকা ও ২০০ ভরি রুপা, এবং উত্তম জুয়েলার্সের বার ভরি সোনা, ১৫ লাখ টাকা ও ১০০ ভরি রুপা ডাকাত দল লুট করে নিয়ে গেছে।

ঘটনার বিষয়,রঞ্জন কর্মকারে পিতা রতন কর্মকার বলেন, আনুমানিক রাত দুইটার দিকে, তার বাসাতে গিয়ে গেটে প্রচন্ড বেগে শব্দ করে ডাকাডাকি শুরু করেন একদল লোক। বাড়ির মধ্য থেকে তারা কে জানতে চাইলে ডাকাত দল নিজেদেরকে প্রশাসনের লোক বলে পরিচয় দেন। এরপরে তিনি আর তার বাড়ির গেট খোলেন নি।

আঁখি জুয়েলার্স এর স্বত্বাধিকারী আত্তাব জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে দোকানে এসে দেখেন তার দোকানে কিছু নেই। এতে তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। মা জুয়েলার্সের স্বত্বাধিকারী ইউসুফ আলী জানান, তিনি অনেক টাকা ঋণ করে দোকান করেছিলেন বর্তমানে তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।

মধু জুয়েলার্স এর তপন কর্মকার কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, সোনা ও নগদ টাকা সহ তার প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা লুট করে নিয়েছে ডাকাত দল । এতে তিনি নিরুপায় হয়ে পড়েছেন।

ঘটনার বিষয় ভাঙ্গুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ভোরে ডাকাতি হওয়া দোকানগুলি ও এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ডিবি ঘটনাটির স্থান পরিদর্শন করে তদন্ত করবেন বলেও জানান তিনি।

ঘটনার বিষয়, ডাকাতির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মর্মে স্বীকার করে সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক (চাটমোহর সার্কেল) জানান, ডাকাতির ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন টিম কাজ করছেন এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গত ২৪শে নভেম্বর দিবাগত রাত তিনটার দিকে পাবনার বেড়া উপজেলার যমুনাপাড়ের নাকালিয়া বাজারে এভাবেই স্বর্নের দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।