৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ 🔻 ২৩শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২🔻 ১৬ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭

যুক্তরাষ্ট্রে সন্তান জন্ম দিলেই ৫ হাজার ডলারের বোনাস পেতে পারেন মা

শেয়ার করুন:

ওয়াশিংটন, এপ্রিল ২৬ – যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমাগত জন্মহার হ্রাসের প্রেক্ষাপটে পরিবার গঠনে উৎসাহ দিতে নতুন পদক্ষেপের কথা ভাবছে হোয়াইট হাউস। দেশজুড়ে বিয়ে এবং সন্তান ধারণে আগ্রহ বাড়াতে, প্রশাসনের উপদেষ্টাদের কাছে একটি প্রস্তাব উঠেছে—সন্তান জন্ম দিলে প্রতিটি মাকে দেওয়া হবে ৫,০০০ ডলারের একটি ‘শিশু বোনাস’।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই প্রস্তাবকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “আমার কাছে এটা একটা ভালো ধারণা বলে মনে হচ্ছে।” যদিও এখনও এ বিষয়ে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি তিনি।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেন, “প্রেসিডেন্ট আমেরিকান পরিবারগুলিকে সমর্থন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি চান আমেরিকা এমন একটি দেশ হোক যেখানে সমস্ত শিশু নিরাপদে বেড়ে উঠতে পারে এবং আমেরিকান স্বপ্ন অর্জন করতে পারে।” লিভিট আরও জানান, একজন মা হিসেবে তিনি এই ধরনের নীতিকে সমর্থন করেন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করেন।

এই প্রস্তাবনা এখনো আলোচনা পর্যায়ে থাকলেও, প্রশাসনের পক্ষ থেকে জন্মহার বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আগেও নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (IVF) সহজলভ্য করতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একাধিক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন।

প্রচারণার সময় ট্রাম্প নিজেকে “আইভিএফের রাজা” বলে অভিহিত করেছিলেন এবং রসিকতা করে বলেন যে তিনি হতে পারেন “নিষেক রাষ্ট্রপতি”।

এদিকে ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও জন্মহার বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দিচ্ছেন। তিনি শিশু কর ক্রেডিট প্রতি শিশুর জন্য ৫,০০০ ডলারে উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছেন। জানুয়ারিতে ‘মার্চ ফর লাইফ’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমি চাই আমাদের দেশে আরও সুখী শিশু জন্ম নিক। আমাদের সরকারের কাজ তরুণ বাবা-মার জন্য সন্তান জন্মানো সহজ করে তোলা।”

একইসঙ্গে কিছু প্রস্তাব বাইরের সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকেও এসেছে। প্রসব-পন্থী দম্পতি সিমোন ও ম্যালকম কলিন্স হোয়াইট হাউসের ডোমেস্টিক পলিসি কাউন্সিলে বেশ কয়েকটি খসড়া নির্বাহী আদেশ জমা দিয়েছেন, যার মধ্যে ছয় বা তার বেশি সন্তান জন্ম দেওয়া মায়েদের জন্য “জাতীয় মাতৃত্ব পদক” এবং বিবাহিত দম্পতিদের কর ছাড় সংক্রান্ত সুপারিশ রয়েছে।

তবে সবাই এই উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন না। ‘মমসরাইজিং’ সংস্থার সিইও ক্রিস্টিন রো-ফিঙ্কবেইনার এই প্রস্তাবগুলোকে “নিছক পাগলামি” বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “পরিবারের উন্নতির জন্য দরকার সাশ্রয়ী শিশু ও প্রবীণদের যত্ন, মাতৃস্বাস্থ্যসেবা এবং বেতনসহ ছুটি—শুধু প্রণোদনা নয়।”

তার মতে, প্রমাণিত নীতিগুলো ছাড়া শুধুমাত্র প্রণোদনার ওপর নির্ভর করলেই পরিবার গঠনের হার বাড়বে না।

বর্তমানে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা বিভিন্ন প্রস্তাব পর্যালোচনা করছেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আরও সময় লাগবে বলে জানা গেছে।