সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন। এ সফরে তিনি সিরিয়াকে আইএসআইএল বা আইএসআইএস বিরোধী বৈশ্বিক জোটে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রোববার (০৯ নভেম্বর) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আল-শারা গত বছর শাসক বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন। গত সোমবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি। আল-শারা শনিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন। একই সময়ে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশজুড়ে আইএসআইএল সেলগুলোর বিরুদ্ধে ‘বৃহৎ নিরাপত্তা অভিযান’ শুরুর ঘোষণা দিয়েছে।
আলজাজিরা জানিয়েছে, সিরিয়ার স্বাধীনতার পর (১৯৪৬) এই প্রথম কোনো সিরিয়ান প্রেসিডেন্টের যুক্তরাষ্ট্র সফর এটি। আল-শারা এর আগে গত মে মাসে রিয়াদে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। শুক্রবার তাকে মার্কিন সন্ত্রাসী নিষেধাজ্ঞা তালিকা থেকে সরানো হয়েছে।
মার্কিন দূত টম ব্যারাক সম্প্রতি বলেছেন, আল-শারার কাছ থেকে আশা করা হচ্ছে যে তিনি আইএসআইএল-বিরোধী আন্তর্জাতিক মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটে যোগদানের চুক্তি স্বাক্ষর করবেন।
রয়টার্স ও এএফপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র দামেস্কে একটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। এটি সিরিয়া-ইসরায়েল নিরাপত্তা চুক্তি বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।
অন্যদিকে, আল-শারা তার সফরে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার পুনর্গঠনের জন্য আর্থিক সহায়তা চাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের পর পুনর্গঠনে কমপক্ষে ২১৬ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। এ পরিসংখ্যনকেযা প্রতিষ্ঠানটি ‘সর্বনিম্ন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আল-শারা একসময় আল-কায়েদার সিরীয় শাখার নেতৃত্বে ছিলেন। তবে তার সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এক দশক আগে নেটওয়ার্কটি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে আইএসআইএলের বিরোধিতায় লিপ্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্র গত জুলাইয়ে এইচটিএসকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে সরিয়ে দেয়।
এ সফরটি আল-শারার জন্য দ্বিতীয় যুক্তরাষ্ট্র সফর। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেন। আর এটি ছিল দীর্ঘ কয়েক দশক পর কোনো সিরিয়ান প্রেসিডেন্টের প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে ভাষণ। গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন নেতৃত্বে আল-শারার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রস্তাব গৃহীত হয়।
এদিকে শনিবার সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, সিরিয়ান নিরাপত্তা বাহিনী দেশজুড়ে ৬১টি অভিযান চালিয়েছে। এসব অভিযানের লক্ষ্য ছিল আইএসআইএল ঘাঁটি ও সন্ত্রাসী সেল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, কমপক্ষে ৭১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, অভিযানগুলো আলেপ্পো, ইদলিব, হামা, হোমস ও দামেস্কের আশপাশের এলাকায় পরিচালিত হয়েছে। এটি ছিল সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় প্রচেষ্টার ধারাবাহিক অংশ।







