১৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ 🔻 ৩রা আশ্বিন, ১৪৩২🔻 ২৫শে রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭

রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র পরিদর্শনের পর যা জানাল আইএইএর বিশেষজ্ঞ দল

শেয়ার করুন:

বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রি-অপারেশনাল সেফটি রিভিউ টিম মিশন পরিচালনা করেছে। ১০-২৭ আগস্ট পর্যন্ত চলা এ পরিদর্শন মিশনের লক্ষ্য ছিল কেন্দ্রটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে এর নিরাপত্তা প্রস্তুতি ও কার্যক্রম মূল্যায়ন করা। এ খবর দিয়েছে আমেরিকান নিউক্লিয়ার সোসাইটি পরিচালিত অনলাইন নিউক্লিয়ার নিউজওয়্যার।

এতে বলা হয়, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পাবনা জেলার পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ১০০ মাইল উত্তর-পশ্চিমে এর অবস্থান। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকানা বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি কমিশনের। এতে দুটি ইউনিট (ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর) থাকবে। রূপপুর-১ ইউনিটের কংক্রিট ঢালাই শুরু হয় ৩০ নভেম্বর ২০১৭ সালে। ইউনিট-২ এর কাজ শুরু হয় ১৪ জুলাই ২০১৮ সালে। প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সংযুক্ত হবে। আইএইএ টিম রূপপুর-১ ইউনিটের বিভিন্ন কার্যক্রম পরীক্ষা করে। এর মধ্যে আছে এর নেতৃত্ব ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা, কর্মীদের প্রশিক্ষণ ও যোগ্যতা, অপারেশন ও রক্ষণাবেক্ষণ, প্রযুক্তিগত সহায়তা, বিকিরণ সুরক্ষা ও রসায়ন, জরুরি পরিস্থিতি প্রস্তুতি, দুর্ঘটনা ব্যবস্থাপনা ও কমিশনিং প্রক্রিয়া।

টিম উল্লেখ করেছে, অগ্নি প্রতিরোধ ও প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা এবং অপারেশন তদারকি আরও উন্নত করার সুযোগ রয়েছে। পরিদর্শক দলে ছিলেন ১৪ জন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ। তারা এসেছিলেন বুলগেরিয়া, চীন, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, হাঙ্গেরি, বৃটেন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এছাড়া আইএইএ’র কর্মী এবং রাশিয়ার একজন পর্যবেক্ষক অন্তর্ভুক্ত ছিলেন টিমে। তারা রূপপুর কেন্দ্রের প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য, কর্মী সংগঠন, দায়িত্ব ও অপারেশন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নথি পর্যালোচনা করেন।

আইএইএ জানিয়েছে, রূপপুর প্রকল্পের কর্মীরা পেশাদার, দক্ষ এবং নিরাপত্তা উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জ্ঞান বিনিময় এবং অভিজ্ঞতা ভাগাভাগির মাধ্যমে কেন্দ্রটি বিশ্বমানের নিরাপত্তা বজায় রাখতে সক্ষম হবে। আইএইএ’র সিনিয়র নিউক্লিয়ার সেফটি অফিসার সাইমন মরগান বলেন, কমিশনিং থেকে পূর্ণ অপারেশনে রূপান্তর একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

টিম দেখেছে, ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে সব শর্ত পূর্ণ হওয়ার পরই নিরাপদে এই ধাপ সম্পন্ন হবে, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী হতে হবে। রূপপুর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আধুনিক সিমুলেটরের মাধ্যমে রিফুয়েলিং মেশিন প্রশিক্ষণ চালু করা হয়েছে। এটিকে বৈশ্বিক পারমাণবিক শিল্পে সেরা অনুশীলনের  উদাহরণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে আইএইএ। টিম তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন রূপপুর কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করেছে। বাংলাদেশ সরকার তাতে মন্তব্য ও সুপারিশ জানাবে। পরে আইএইএ তা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।