৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ 🔻 ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২🔻 ১৫ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭

সাঁথিয়ায় ঐতিহ্যবাহী মহাদেবের চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত

শেয়ার করুন:

সাঁথিয়া থেকে মনসুর আলম খোকন ঃ পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সোনাতলা গ্রামে মহাসমারোহে মহাদেবের চড়ক পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বৈশাখের শেষ দিনের তিথিতে গোধূলিলগ্নে ইছামতি নদীর তীরে সোনাতলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চলে এই চড়ক পূজার কার্যক্রম। এতে নারী-পুরুষ প্রচুর দর্শক,ভক্তকুলের সমাগম ঘটে।
এ পূজার পুরোহিত জানান, ভারত উপমহাদেশে এ পূজার প্রচলন হয় বান রাজার আমল থেকে।
পূজা উদযাপন পরিষদের নাগডেমরা ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আখিল কুমার জানান, বৈশাখের শেষ তিথিতে মহাদেবের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এই পূজার আয়োজন করা হয়। এই পূজায় পিঠে বরশি বিঁধিয়ে রশিতে ঝুলিয়ে চারদিকে ঘোরানো হয়। এই পূজায় অংশগ্রহণ করেন অজিত হলদার। তিনি প্রায় ২২ বছর যাবত এই বরশি বেঁধানো পূজাটি করছেন।
এসময় সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) সাইদুর রহমানসহ পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।

শত বছর আগে রাধারমণ সাহা রচিত ‘পাবনা জেলার ইতিহাস’ গ্রন্থে জানা যায়, শ্রী গৌরাঙ্গ দেবের অন্যতম পার্ষদ কালাকৃষ্ণ দাস ঠাকুর পঞ্চদশ শতাব্দীতে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এই সোনাতলা গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। তাঁহার নিবাস বর্ধমান জেলার কাটোয়া সন্নিহিত আকাইহাট গ্রামে ছিল। ইনি দ্বাদশ গোপালের অন্যতম গোপাল। শ্রী নিত্যানন্দ প্রভু ইহাকে দীক্ষা মন্ত্র প্রদান করেন এবং ইনি তাহার অত্যন্ত প্রিয়পাত্র ছিলেন বলিয়া জানা যায়। শ্রীচৈতন্যচরিতামৃতে বর্ণিত আছে-“কৃষ্ণদাস নাম শুদ্ধ কুলীন ব্রাহ্মণ। যার সঙ্গে লইয়া কৈল দক্ষিণ গমন।” কালাকৃষ্ণদাসকে কালিয়া কৃষ্ণদাসও বলে। জনশ্রুতি রয়েছে, নদীর এক কুমির কালাকৃষ্ণ দাস ঠাকুরের শিষ্য হয়েছিল। কালাকৃষ্ণদাস ঠাকুরের বাড়িতে তাঁর নামানুসারে ‘শ্রী শ্রী কালাকৃষ্ণদাস ধাম’ নামে একটি মন্দির ও আশ্রম এখনো রয়েছে এবং পূজার্চনা চলে আসছে।