ছবিটি- প্রতিকী
মনসুর আলম খোকন, সাঁথিয়া, পাবনা : পাবনার সাঁথিয়ায় বিভিন্ন প্রকার সরকারি ভাতা দেবার কথা বলে দারিদ্র, অসহায় ও প্রতিবন্ধীদের নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে মহিলা ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে। টাকা নিয়ে ভাতার কার্ড করে না দেওয়ায় ইউপি সদস্যের দ্বারে ঘুরছে অসহায় মানুষরা। এদিকে উৎকোচের টাকা ফেরত চাওয়ায় পাল্টা হুমকি দেবার অভিযোগ উঠেছে ওই ইউপি সদস্য জামিরনের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য জামিরন খাতুন নির্বাচিত হবার পর থেকেই অসহায় ব্যক্তিদের নিকট থেকে ভাতার কার্ডের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়নের হাসানপুর গ্রামের মৃত হোসেন মুন্সীর স্ত্রী সড়ক দুর্ঘটনায় আহত অসহায় জয়বাহার খাতুনের নিকট থেকে বিধবা ভাতার কার্ড দেবার কথা বলে তিন হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ করে। দীর্ঘ তিনবছর হলেও ইউপি সদস্য জামিরন ভাতার কার্ড করে না দিয়ে উক্ত টাকা আত্মসাত করে। হতদরিদ্র জয়বাহার খাতুন জানান, অন্যের বাড়িতে কাজ করে মেম্বারকে তিন হাজার টাকা দেই। টাকার অভাবে ঔষুধ না কিনেও টাকা জামিরনকে দেই। সে আজ পর্যন্ত আমাকে ভাতার কার্ড করে দেয়নি। টাকা ফেরত চাইলে হুমকি দেয়। আমার কোন ছেলে সন্তান না থাকায় মেয়ের বাড়ি ও স্বজনদের বাড়িতে থাকি। নিজের নেই কোন মাথা গোঁজার ঠাঁই।
ক্ষেতুপাড়া ইউপির বিষ্ণুপুর গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে জয়নালের (৬৮) নিকট থেকে বয়স্ক ভাতার কার্ড দেবার কথা বলে দুই হাজার টাকা নিয়েছে। কার্ড না দেয়ায় জামিরন মেম্বারের নিকট টাকা চাইলে সে নানা তাল বাহনা করছে।
বিষ্ণুপুর গ্রামের মৃত হায়দারের ছেলে নুরুল ইসলাম ভগলা (৬৬) এর নিকট থেকে তিন হাজার টাকা নিয়েছে জামিরন মেম্বার। তাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করার কথা বলে এ টাকা নেয়। নুরল ইসলামের স্ত্রী কমেলা খাতুন জানান, লাভের উপর টাকা নিয়ে জামিরন মেম্বারকে দেয়া হয় ভাতার কার্ডের জন্য। লাভের উপর আনা টাকা পরিশোধ করতে ৯ শত টাকা লাভ দেয়া হয়। তিন বছর হলেও আমার স্বামীর নামে কোন কার্ড ইস্যু করা হয়নি।
একই গ্রামের প্রতিবন্ধী বারেক শেখ জানান, আমাকে ভাতার কার্ড করে দেবে বলে জামিরন মেম্বার তিন হাজার টাকা নেয়। সে এখন পর্যন্ত কার্ড করে দেয়নি। বিষ্ণুবাড়িয়া গ্রামের রেজাই, আনজাত, আ: সাত্তারসহ অসংখ্য মানুষের নিকট থেকে ভাতার কার্ড দেবার কথা বলে উৎকোচ গ্রহণ করেছে মহিলা মেম্বার জামিরন খাতুন। এছাড়াও সে গর্ভবতী ভাতা দেবার কথা বলে বিষ্ণুপুর গ্রামের হাবিলের স্ত্রী শামীমার নিকট থেকে ৫ হাজার টাকা ও বিষ্ণুবাড়িয়া গ্রামের চতুরের স্ত্রী স্বপ্নার নিকট থেকে ৩ হাজার টাকা নিয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জামিরন খাতুন জানান, ভাতার জন্য একজনের নিকট থেকে ২ হাজার টাকা নিয়ে ছিলাম। সময় হলে তাকে ভাতার কার্ড করে দিবো। গর্ভবতী ভাতা বিষয়ে তিনি বলেন তাদের ভাতা করে দেয়া হয়েছে। তারা এখন মিথ্যা কথা বলছে।







