১২ই ডিসেম্বর, ২০২৫ 🔻 ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২🔻 ২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭

সাঁথিয়ায় কামার পল্লীর ব্যস্ততা

শেয়ার করুন:

আবু ইসহাক,সাঁথিয়াঃ ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কামার পল্লীর শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। করোনা ভাইরাসের কারনে লকডাউনে যানবহন বন্ধ থাকায় দুর দুরান্তের ব্যপারী না আসায় বিক্রি কমে যাওয়ায় দুশচিন্তায় রয়েছেন তারা। 

উপজেলার সব এলাকাতেই কম বেশি কামার শ্রমিক রয়েছে। এর মধ্যে আত্রাইশুকা, বহলবাড়িয়া, সাঁথিয়া বাজার, বোয়াইলমারী ও কাশিনাথপুরে গড়ে উঠেছে কামার পল্লী। কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে সেখানে লোহা আর হাতুড়ির শব্দে এখন আকাশ বাতাস মুখরিত। এ পেশার মানুষ সারা বছর কম বেশি লোহার কাজ করলেও ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে বৃদ্ধি পায় তাদের কর্মব্যস্ততা। কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে রাত অবধি  চলছে তাদের রকমারি কর্মযজ্ঞ। 

ঈদুল আযহা উপলক্ষে বাড়তি চাহিদা থাকায় ছুরি, দা, বটি, চাকু, চাপাতি তৈরিতে পরিবারের সদস্যদেরও যেন নেই কোন বিশ্রাম। পরিবার প্রধানের সাথে স্ত্রী ও সন্তানরা হাত লাগিয়ে এগিয়ে নিচ্ছে কাজের গতি। 

সরেজমিন বোয়াইলমারী কামার পল্ল¬ীতে গিয়ে দেখা যায়, কামাররা এক হাতে হাওয়া টানছে অন্য হাত দিয়ে আগুনে দেওয়া লোহা এদিক সেদিক করছে। লোহা পুরে লাল হলে দু’জন মিলে তালে তালে আঘাত করে যাচ্ছে হাতুড়ি দিয়ে। এমনি নিপুণ হাতে তৈরি করা হচ্ছে ছুরি, দা, বটি, চাকু ও চাপাতি। ওই গ্রামের মুকুল হোসেন দুই ছেলে মিরাজুল ও সিরাজুল ইসলামকে নিয়ে কামারের কাজ করছেন। অন্য দিকে বাড়ির মহিলা সদস্যরা তৈরি করা লোহার জিনিসপত্র বিদ্যুৎ দ্বারা চালিত মেশিনে ধার দিয়ে যাচ্ছেন। আকর্শনীয় করতে মেশিনে ও পাথর দিয়ে ঘঁষে ঘঁষে তা পরিস্কার ঝকঝকে, তকতকে করছেন।

এসব এলাকার তৈরি করা ধারালো লোহার যন্ত্রপাতির চাহিদা রয়েছে অনেক। ব্যবসায়ীরা কামারদের কাছ থেকে এগুলো সংগ্রহ করে ঢাকা, চট্রগ্রাম, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকেন। সাঁথিয়ার কামার পল্লীর লোহার চাকু, বটি ও চাপাতির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে মানিকগঞ্জ, সাভার ও  টাংগাইলে। 

বহলবাড়িয়া গ্রামের আঃ গফুর, আসলাম, বোয়াইলমারী গ্রামের মুকুল হোসেন, লোকমান হোসেন জানান, মানিকগঞ্জ ও সাভারের বড় বড় ব্যবসায়ীরা প্রতি বছর তাদের নিকট থেকে এগুলো ক্রয় করে থাকেন। কোরবানীর ঈদে স্থানীয়দের পাশাপাশি পাইকারদের কাছে চাহিদা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। এ বছর যানবহন বন্ধ থাকায় ব্যপারী আসতে না পারায় বিক্রি কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।  ##