১০ই ডিসেম্বর, ২০২৫ 🔻 ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২🔻 ১৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭

সাঁথিয়ায় পেঁয়াজ ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক, দাম কম হওয়ায় লোকসানের আশংকা

শেয়ার করুন:

উজ্জ্বল হোসেন: পাবনায় সাঁথিয়া চলতি বছর পেঁয়াজ ঘরে তুলতে শুরু করে দিয়েছে কৃষকরা। বাজার দাম কম লোকসানের আশংকায় ভুগছে কৃষক। দেশের প্রায় ৭০ ভাগ পেঁয়াজের চাহিদা পুরণে সক্ষম হলেও দাম কম থাকায় ভালো নেই পাবনার চাষীরা। উৎপাদন ভালো হওয়ায় চোখে মুখে খুশির ঝলক।

পাবনার সাঁথিয়া কৃষি অফিস ও কৃষক সূত্রে জানা যায়, সাঁথিয়া উপজেলায় ১৪ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। লক্ষমাত্রার চেয়ে চলতি বছর এ উপজেলায় পেঁয়াজের আবাদ ও উৎপাদন ১ হাজার হেক্টর বেশি হয়েছে।
উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিল ও মাঠে ব্যাপক পেঁয়াজের আবাদ করে কৃষকরা।  উপযোগী আবহাওয়া ও সঠিক পরিচর্যায় কৃষকদের ব্যস্ত সময় কাটেছে পেঁয়াজর জমিতে। ইতো মধ্যে  কৃষকরা তীব্র গরম উপেক্ষা করে শ্রমিক নিয়ে মাঠে উপস্থিত হচ্ছে ভোর বেলা থেকে। শ্রমিক ও পরিবারের মহিলা, শিশুদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন জমি থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহে। পরিবারের অন্য সদস্যরাও পেঁয়াজ মৌসুমে বসে নেই। মহিলারা ভোর রাত থেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন শ্রমিকদের খাবার রান্নার কাজে ও পেঁয়াজের মাথা কাটার কাজে। পরিবারের ছোট সন্তানটিও যেন বসে নেই করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় বাবার কাজের সাথে সেও যেন একজন পেশাদার কৃষক। মহিলারা রাত গভীর পর্যন্ত পেঁয়াজের অগ্রভাগ কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
অক্টোবরে সাঁথিয়ার কৃষকরা পেঁয়াজের বীজতলা তৈরি করে থাকে। জমিতে জলাবদ্ধতা থাকায় তারা কাঁদা মাটির উপর ছাই ব্যবহার করে বীজতলা করেন। ডিসেম্বরের মাঝা মাঝি সময়ে তারা পেঁয়াজ রোপনে ব্যস্ত সময় পার করেন।
উপজেলা বিষ্ণুপুর গ্রামের আলাই, রাজু আহম্মদ জানান, আমাদের নিজস্ব জমি না থাকায় লীজ নিয়ে পেঁয়াজ চাষ করে থাকি। এবছর পেঁয়াজের দানা ৭ হাজার টাকা হওয়ায় অনেকেই বীজতলা তৈরি করতে পারি নাই। এক বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে পেঁয়াজ রোপন করতে প্রায় ১২ হাজার টাকার বীজ লাগছে। এক বিঘা জমির লীজ বাবদ মালিককে ১৫/২০ হাজার টাকা দিতে হয়। সার, শ্রমিকসহ অন্য খরচসহ প্রায় বিঘায় ৪০ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। সে তুলনায় পেঁয়াজের নাম না পাওয়ায় লোকসানের আশংকায় ভুগছে তারা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে বর্তমানে পেঁয়াজ ৯ শত থেকে ১১ শত টাকা দামে বিক্রয় হচ্ছে।
বিষ্ণুবাড়িয়া গ্রামের প্রভাবশালী পেঁয়াজ রোপনকারী কৃষক ইদ্রিস আলী জানান, এত খরচের পরও পেঁয়াজের বাজার এবছর কম থাকায় আমরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সরকার পেঁয়াজের বাজার আমাদের অনুকুলে না রাখলে কৃষকরা এ আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। এদিকে উপজেলার ধনী শ্রেণির কৃষকরা জমির পেঁয়াজ ঘরে সংরক্ষরণ করছে বেশি দামের আশায়। তবে ক্ষুদ্র ও দারিদ্র শ্রেণির কৃষকদের বিভিন্ন প্রয়োজনে হাটে পেঁয়াজ বিক্রয় করতে হচ্ছে। এতে করে তারা কম দাম পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়ছে।
সাঁথিয়া উপজেলার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সঞ্জিব কুমার ঘোষামী জানান, চলতি বছর জমিতে পেঁয়াজের বাম্পার উৎপাদন হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সাধ্যমত পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টি না হলে দ্রæত সময়ের মধ্যে কৃষকদের ঘরে উঠবে পেঁয়াজ।