পাবনার সাঁথিয়া কৃষি অফিস ও কৃষক সূত্রে জানা যায়, সাঁথিয়া উপজেলায় ১৪ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মাঠে কৃষকদের সহায়তা করে যাচ্ছে কৃষি অফিস।
ইতো মধ্যে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ঘুঘুদহ বিলসহ বিভিন্ন বিল পারে কৃষকদের ব্যস্ত সময় কাটছে পেঁয়াজ রোপনে। কৃষকরা কুয়াশা ও তীব্র শীত উপেক্ষা করে শ্রমিক নিয়ে মাঠে উপস্থিত হচ্ছে। তারা ইঞ্জিল চালিত মেশিন দ্বারা জমি চাষ করে সঠিক পরিমাপে সার ছিটিয়ে রোপ কাজ শুরু করছে। পরিবারের অন্য সদস্যরাও পেঁয়াজ মৌসুমে বসে নেই। মহিলারা ভোর রাত থেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন শ্রমিকদের খাবার রান্নার কাজে। পরিবারের ছোট সন্তানটিও যেন বসে নেই করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় বাবার কাজের সাথে সেও যেন একজন পেশাদার কৃষক।
পেঁয়াজের বীজের দাম ও জমির লীজের দাম বেশি হওয়ায় অনেক কৃষক আর্থিক ভাবে পেঁয়াজ চাষে অক্ষম হয়ে পড়ছে।
অক্টোবরে সাঁথিয়ার কৃষকরা পেঁয়াজের বীজতলা তৈরি করে থাকে। জমিতে জলাবদ্ধতা থাকায় তারা কাঁদা মাটির উপর ছাই ব্যবহার করে বীজতলা করেন। ডিসেম্বরের মাঝা মাঝি সময়ে তারা পেঁয়াজ রোপনে ব্যস্ত সময় পার করে।
উপজেলা বিষ্ণুপুর গ্রামের আলাই, রাজু আহম্মদ জানান, আমাদের নিজস্ব জমি না থাকায় লীজ নিয়ে পেঁয়াজ চাষ করে থাকি। এবছর পেঁয়াজের দানা ৭ হাজার টাকা হওয়ায় অনেকেই বীজতলা তৈরি করতে পারি নাই। এখন এক বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে পেঁয়াজ রোপন করতে প্রায় ১২ হাজার টাকার বীজ লাগছে। এক বিঘা জমির লীজ বাবদ মালিককে ১৫/২০ হাজার টাকা দিতে হয়। সার, শ্রমিকসহ অন্য খরচসহ প্রায় বিঘায় ৪-০ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
বিষ্ণুবাড়িয়া গ্রামের প্রভাবশালী পেঁয়াজ রোপনকারী কৃষক ইদ্রিস আলী জানান, এত খরচের পরও পেঁয়াজের বাজার এবছর কম থাকায় আমরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সরকার পেঁয়াজের বাজার আমাদের অনুকুলে না থাকলে কৃষকরা এ আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে।
সাঁথিয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পেঁয়াজ চাষীদের দাবি কৃষি অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা যদি ভালভাবে মাঠে সরেজমিন তদারকি করতো এবং চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেয় তাহলে ভালভাবে পরিচর্যা করে ভাল উৎপাদন করা যেত।
সাঁথিয়া উপজেলার কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সঞ্জিব কুমার ঘোষামী জানান, একজন সুপারভাইজার কে কয়েকটি গ্রামের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমরা খুবই জনবল সংকটে ভুগছি। এ নিয়েই যতটুকু চেষ্টা করা যায় কৃষকদের সহায়তা করছি। চলতি বছর ১৭ শত হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়। এপর্যন্ত ৩ হাজার ৬শত হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ রোপন করা হয়েছে।








