১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ 🔻 ৩রা পৌষ, ১৪৩২🔻 ২৬শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭

৪ শ বছর ধরে সাঁথিয়ায় বসবাস করছেন মোগল বংশধররা

শেয়ার করুন:

  

         ।। মনসুর আলম খোকন।। 

ছবিতে দেখা যাচ্ছে দুই ভাইকে যাঁরা সম্রাট তৈমুর লঙ ও মির্জা জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবরের বংশধর। পাবনার সাঁথিয়ার কাশিনাথপুর ইউনিয়নের বরাট গ্রামে তাদের বাড়িতে গত বছর ক্যামেরাবন্দী করার সুযোগ পেয়েছিলাম।

মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা মির্জা জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর যিনি ছিলেন মধ্য এশিয়ার একজন বিখ্যাত মুসলিম সম্রাট। ১৪৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি বর্তমান উজবেকিস্তানে জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি তৈমুর লঙের ষষ্ঠ বংশধর ছিলেন। তৈমুরীয় আমির মীরন শাহের মাধ্যমে বাবরের বংশধারা প্রবাহিত হয়েছে এবং মাতার দিক থেকে চেঙ্গিস খানের বংশধর ছিলেন। তিনি মির্জা ওমর সাঈদ বেগের (ওমর শেখ মির্জা) পুত্র ও তৈমুরী শাসক সুলতান মোহাম্মদের প্রপৌত্র ছিলেন। তিনি পানিপথের প্রথম যুদ্ধে দিল্লীর লোদি রাজবংশের শেষ সুলতান ইব্রাহিম লোদিকে পরাজিত করে দিল্লি দখল করে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তার মৃত্যুর পর তার পুত্র মির্জা হুমায়ুন সিংহাসনে আরোহণ করেন। পানিপথের যুদ্ধে তিনিই প্রথম কামানের ব্যবহার করেন এবং তার প্রখর রণকৌশলের  কাছে হার মানেন ইব্রাহিম লোদি। হুমায়ুনের পুত্র ছিলেন সম্রাট আকবর। আকবরের পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীর। জাহাঙ্গীরের পুত্র সম্রাট শাহজাহান। শাজাহানের প্রিয়তমা স্ত্রী মমতাজের স্মৃতি রক্ষার্থে ভারতের যমুনা নদীর পাশে ‘তাজমহল’ নির্মিত হয়েছিল যা মধ্যযুগের সপ্তম আশ্চর্য।

মোগল সম্রাট শাহজাহানের মৃত্যুর পর ১৬৫০ সালে শাহজাদা দারা শিকোহকে বন্দী করে হত্যা করে সম্রাট শাহজাহানেরই আরেক সন্তান আওরঙ্গজেব। সম্রাট আওরঙ্গজেব তার আরেক ভাই শাহজাদা মুরাদকেও হত্যা করে। শাজাহানের আরেক ছেলে শাহজাদা সুজা পরিবারপরিজন নিয়ে প্রাণরক্ষার্থে আরাকান রাজ্যে আশ্রয় নিয়ে সেখানে নিহত হন। সে সময় দারা শুকোহর ছেলে সোলেমান প্রাণরক্ষার্থে পরিবারপরিজন নিয়ে আশ্রয় নেন সে সময়ের  বাংলার সুবেদার মীর জুমলার কাছে। মীর জুমলা ভালো মানুষ ছিলেন। তাই তিনি সোলেমানকে আওরঙ্গজেবের হাতে তুলে না দিয়ে অতি গোপনে শাহজাদা সোলেমান ও তাঁর পরিবারবর্গকে পাবনার সাঁথিয়ার ছাতক বরাট গ্রামে থাকার ব্যবস্থা করেন। 

মোগল শাহী মহল থেকে চলে আসার পর পরিবারটি গত প্রায় চার শ’ বছর এই বাড়িটিতেই বসবাস করছেন। তবে এখন বাড়িটিতে তারা কেউ নিয়মিত বসবাস করেন না। মির্জা কামরুল হাসান সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী। তাঁর ছোট ভাই অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে থাকেন।